রাজনীতি

‘নেতাদের পিছনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরা বন্ধ করে দিয়েছি’

‘আমরা নেতৃত্ব পাওয়ার পর দলীয় কর্মসূচিতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা এখন পর্যন্ত ৬৪টি প্রোগ্রাম করেছি। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। নেতাদের পিছনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরার ট্রাডিশন বন্ধ করে দিয়েছি। আমার পিছনেও কোনো বাইক দেখবেন না। নেতার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার যে ট্রাডিশন ছিল এটিও বন্ধ করে দিয়েছি।’

Advertisement

কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট আল-সাদী ভূঁইয়া।

জাগো নিউজ: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ ছাত্রদের জন্য কাজ করবে নাকি আওয়ামী লীগের জনশক্তি জোগান দেবে?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের জন্য কাজ করে আসছে। সাধারণ ছাত্রদের নিয়েই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসূচি। ঢাকার ভিতরে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসন বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে। আমরা এরই মধ্যে এগুলোর তালিকা তৈরি করেছি। কোনো প্রশাসন যেন শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে মুনাফা লুটতে না পারে সেটির জন্য আমরা কর্মসূচি নিয়েছি।

Advertisement

আরও পড়ুন>> রাজনীতি ছাত্রলীগকর্মীদের কাছে লাভ-লোকসানের বিষয় নয় 

‘সেশনজট, ফলাফলজট, অতিরিক্ত ফি- এসবের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করবো। জাতির জনকের হাতে গড়া এ সংগঠন শুধু পড়ালেখায়ই সীমাবদ্ধ ছিল না। এ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পড়ালেখা ও লড়াই- দুটি একসঙ্গেই করতে হয়। দেশের মানুষের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রাখতে আমরা সহযোগিতা করছি। আমরা সবাই এখানে শিক্ষার্থী। শুধু পড়ালেখাই নয়, আমরা দেশের প্রয়োজনে রাজপথে লড়াই করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য যে কাজ করে যাচ্ছেন তার ধারা অব্যাহত রাখতে ছাত্রসমাজের যত সহযোগিতা দরকার তা করবো।’

জাগো নিউজ: আপনাদের কোন কাজের মাধ্যমে সাধারণ ছাত্ররা উপকৃত হবে?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছি। এগুলো শিগগির বাস্তবায়ন হবে। বাস্তবায়ন হলেই শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের কোনো সমস্যার কথা জানালে আমরা তা সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

Advertisement

আরও পড়ুন>> মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতৃত্ব পেলেন যারা 

জাগো নিউজ: কয়েকদিন ধরে চলমান ঢাকার কয়েকটি কলেজের মধ্যে টানা সংঘর্ষ বন্ধে আপনারা কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কি? না নিলে কোন ধরনের উদ্যোগ নিতে চান?রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজের মধ্যে সংঘর্ষের খবর জানতে পেরেছি। আমরা কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। সামনে যেন এরকম ঘটনা না ঘটে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো। এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে বিবাদ সেটি কীভাবে কমানো যায় এটি নিয়েও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসবো। কথা বলবো। এটা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করবো। এছাড়া আপনাদের (গণমাধ্যমের) যে কোনো পরামর্শ থাকলে আমাদের জানাবেন।

জাগো নিউজ: কিশোর গ্যাং ও চাঁদাবাজির সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার খবর প্রায় সময় গণমাধ্যমে আসে। সেক্ষেত্রে আপনি কী করবেন?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: ছাত্রলীগের সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মাঝে-মধ্যে মিডিয়ায় ছাত্রলীগকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হয়। ছাত্রলীগের কেউ যদি কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেখাতে পারবেন না। কেউ যদি করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

জাগো নিউজ: দলীয় কর্মসূচিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ প্রায় সব কর্মসূচিতেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা করেন। সেগুলো থেকে বের হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: আমরা নেতৃত্ব পাওয়ার পর দলীয় কর্মসূচিতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা এখন পর্যন্ত ৬৪টি প্রোগ্রাম করেছি। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। নেতাদের পিছনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরার ট্রাডিশন বন্ধ করেছি। আমার পিছনেও কোনো বাইক দেখবেন না। নেতার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার যে ট্রাডিশন ছিল এটিও বন্ধ করে দিয়েছি। ব্যানার-পোস্টার নিয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছি। সামনের দিনগুলোতে মহানগর ছাত্রলীগকে বিশৃঙ্খলার জন্য কেউ দোষারোপ করতে পারবে না।

আরও পড়ুন>> ছাত্রলীগের নতুন চ্যালেঞ্জ স্মার্ট বাংলাদেশ 

জাগো নিউজ: ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কখন করবেন? কীভাবে করবেন?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: শিগগির কমিটি করার চেষ্টা করবো। আমাদের আর কয়েকটা কর্মিসভা বাকি। সেগুলো শেষ করে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কাজ শুরু করবো। কোনো অছাত্র আমাদের পূর্ণাঙ্গ, থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে আসতে পারবে না।

জাগো নিউজ: আপনার রাজনীতিতে আসার পিছনে কী কী কারণ ভূমিকা রেখেছে?

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: আমার বাবা আমার জন্মের আগ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি একেবারে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে উঠে এসেছি।

জাগো নিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি: জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ।

আল-সাদী ভূঁইয়া/এএসএ/এমএস