আর মাত্র কয়েক দিন পরে মুসলমানদের ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। এরই মধ্যে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজানের বেচাকেনা। এ উপলক্ষে মধ্যপ্রাচ্যের সুপারমার্কেট, চেইনশপ থেকে শুরু করে ছোট দোকানে চলে মূল্য ছাড়ের প্রতিযোগিতা।
Advertisement
বিক্রি বাড়াতে এবং ক্রেতাদের খুশি রাখতে কোম্পানিগুলো খাদ্যপণ্য, গৃহ সামগ্রী পণ্য, ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য একটার সঙ্গে আরেকটা ফ্রিসহ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ মূল্য ছাড় দিয়ে রীতিমতো চলছে প্রতিযোগিতা। রমজান মাসে মার্কেট বিভিন্ন রংয়ের লাইটিং ফেস্টুন সাজসজ্জা করা হয়।
ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে কোম্পানিগুলো পণ্যের মোড়ক জাঁকজমপূর্ণ করে থাকে। কুয়েতের সালমিয়া, ফরওয়ানিয়া, মুরগাবসহ বিভিন্ন স্থানে সুপারসপ, বড় বড় চেইন শপগুলোতে ঘুরে দেখা যায় পুরো রমজান মাসজুড়ে চলে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংস, ফলমূল কোমল পানিয়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ছাড়।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ঘুরে পছন্দের পণ্য কম দামে কিনতে পেরে ক্রেতারাও খুশি। অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে মার্কেটগুলোতে বেচাবিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।
Advertisement
স্থানীয় এবং প্রবাসীরা শপিংগুলোতে ঘুরতে এসেও মূল্য ছাড়ের লোভে পড়ে কিনতে বাধ্য হয়। অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে কুয়েতে বলদিয়াসহ একাধিক সরকারি সংস্থা পণ্যের মান, দাম নজরদারি করে থাকে। কোনো ধরনের অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয় আইনি ব্যবস্থা।
বড় থেকে ছোট সবধরনের ব্যবসায়ী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিছু কিছু পণ্যে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। কোম্পানিগুলোও নিজে থেকে উৎসাহিত হয়ে মূল্য ছাড় দিয়ে থাকে। মার্কেটগুলোতে শোভা পাচ্ছে ‘রমাদান কারিম’ লেখা সংবলিত রং বেরংঙের প্ল্যাকার্ড।
আর রমজান উপলক্ষে সম্পন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা যায় বাংলাদেশের বড় থেকে ছোট সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নানা অযুহাতে চলছে বাড়তি দামের হিড়িক। লুলু হাইপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, গ্র্যান্ড হাইপার, ক্যারিফোরসহ অনেক শপিংমল ও সুপার মার্কেট শুধু ছাড় ঘোষণা করেই বসে নেই। তাদের এই ডিসকাউন্টের খবর ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন, কোনো পণ্যে কত ছাড় এটা লিখে বুকলেট ছাপিয়ে বাসার দরজায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশে রমজান আসলে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। সেখানে সৌদি, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসায়ীরা মূল্য ছাড়ের প্রতিযোগিতায় নামেন। রোজার এখনো কিছুদিন বাকি থাকলেও ঘোষিত মূল্য ছাড়ে প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সাথে শপিং মলে এসেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। আর এই রমজানকে কেন্দ্র করে কুয়েতের রাস্তাঘাট আর শপিংমলগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জা।
Advertisement
প্রবাসীরা মনে করেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পারে বিদেশের মতো মূল্য ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন পর্যায়ে সিন্ডিকেটের ফলে পণ্যে মূল্য বেড়ে যায়। সরকার যদি নিয়মিত ভোক্তা অধিকার ও ম্যাজিস্টেট অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসে তাহলে রমজান আসলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে পারবে এবং রমজানে সহনীয় পর্যায় থাকবে নিত্যপণ্যের দাম।
এমআরএম/জিকেএস