চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার (২০ মার্চ) রাশিয়ায় পৌঁছাবেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এবারের সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনা প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আরও জোরালো পশ্চিমাবিরোধী অবস্থান আশা করছেন। আবার ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চীনকে বিশ্বব্যাপী শান্তির দূত হিসেবে উপস্থাপন করবেন শি।
Advertisement
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ায় নির্বাসনে পাঠানো নিয়ে শুক্রবার (১৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে শিই প্রথম বিশ্ব নেতা, যিনি পুতিনকে শক্ত সমর্থন দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>> মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা কর্মকর্তাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বানালো চীন
রোববার (১৯ মার্চ) একটি চীনা সংবাদপত্রের জন্য লেখা নিবন্ধে পুতিন বলেন, আমি আমার পুরোনো বন্ধু শি’র রাশিয়া সফর নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী। তাছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমি ও প্রকৃত কারণগুলো বুঝতে পারায়, আমি শি’র প্রতি কৃতজ্ঞ। আর এ সংকট সমাধানে চীনের গঠনমূলক ভূমিকা ও ইচ্ছাকে আমরা স্বাগত জানাই।
Advertisement
রয়টার্স বলছে, তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই শি’র প্রথম রাশিয়া সফর। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়, চীন আসলেই রাশিয়ার একটি শক্তিশালী বন্ধু ও পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে যৌথ অবস্থান নিতে তারা প্রস্তুত।
তবে, শি’র জন্য এ সফর একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও হতে পারে। কারণ, যুদ্ধ বন্ধে দেশটি গত মাসের শেষের দিকে ১২ দফা প্রস্তাব পেশ করে। এর পাশাপাশি চীন তার নিকটতম মিত্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের প্রতিও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।
আরও পড়ুন>> সৌদির সঙ্গে সমঝোতার পর চীন-রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়ায় ইরান
জানা যায়, মস্কো সফরের শুরুতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে শি বলেন, বেইজিংয়ের শান্তি প্রস্তাবে বৈশ্বিক মতামত প্রতিফলিত হয়েছে। এ প্রস্তাবে নিরপেক্ষভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতিগুলো তুলে ধরা হয়েছে। তবে চীন স্বীকার করে যে, এ ধরনের জটিল সমস্যার সহজ সমাধান নেই।
Advertisement
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা সমর্থকরা যুদ্ধবিরতির নামে পুতিনকে শক্তিশালী করার ‘চক্রান্ত’ বা প্রচেষ্টা খারিজ করে দেবে। তাছাড়া, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ার সব সেনা প্রত্যাহার ছাড়া আর কিছুই মেনে নেবেন না।
ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, চীনের ওই শান্তি প্রস্তাবে কেবল সাধারণ বিবৃতি রয়েছে। কিন্তু কীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটনোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই। এমনকি, এ প্রস্তাবে যে রাশিয়ার জন্য হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা ও বেসামরিক নাগরিক প্রাণ দিয়েছে ও লাখ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তার শাস্তির বিষয়ে বা ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
আরও পড়ুন>> চীনে তেল রপ্তানিতে সৌদিকে পিছনে ফেললো রাশিয়া
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা চীনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছে। কারণ, বেইজিং এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে রুশ ‘সামরিক অভিযানের’ নিন্দা জানায়নি। তাছাড়া অন্যান্য দেশ মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও চীন তার মিত্র দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে সাহায্য করছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ