কৃষি ও প্রকৃতি

দ্বিগুণের বেশি লাভের আশা কৃষকের

চরাঞ্চলের সম্ভবনার ফসল তরমুজ। ফেনীর সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে নানা জাতের রসালো তরমুজ। ফলনও এসেছে বাম্পার। এরই মধ্যে মাঠ থেকে তরমুজ উঠিয়ে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। প্রকৃতি বিরূপ না হলে বিনিয়োগের দ্বিগুণের বেশি লাভের আশা করছেন কৃষক ও উদ্যোক্তারা। তবে শিলাবৃষ্টি হলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা চাষিদের।

Advertisement

কৃষি অফিস জানায়, এ বছর সোনাগাজীর উপকূলীয় ৫টি ইউনিয়ন চর ছান্দিয়া, চর দরবেশ, নবাবপুর, আমিরাবাদ ও সোনাগাজীতে ব্ল্যাকবেরি, গ্লোরি, বাংলালিংক, ওশান সুপার ও ভিক্টর সুপার জাতের তরমুজ আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৩৪৫ হেক্টর জমি ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে।

কৃষকরা জানান, সোনাগাজীতে চতুর্থবারের মতো আবাদ হয়েছে তরমুজ। এখানকার তরমুজ বেশ সুস্বাদু ও গত ৩ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। বাজারেও তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাহিদা। হেক্টরপ্রতি আনুমানিক খরচ হয়েছে ৩ লাখ টাকা। বিক্রি হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হতে পারে।

আরও পড়ুন: তরমুজে ঘুরবে বরগুনার অর্থনীতির চাকা

Advertisement

কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, গত বছর তার পাশের জমিগুলোয় তরমুজের ভালো ফলন দেখে এ বছর তিনি ২ একর জমিতে ২ লাখ টাকা ব্যয়ে আবাদ করেছেন। ফলন দেখে তিনি খুশি। আশা করছেন ৭-৮ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন।

সোনাপুরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আইয়ুব নবী জানান, ১৫ জনের একটি দল গত বছর তরমুজের আবাদ করে প্রায় কোটি টাকা লাভবান হয়েছেন। এ বছর তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে প্রায় ২১৬ একর জমিতে দেড় কোটি টাকা খরচ করে তরমুজের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারও কোটি টাকার বেশি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী তারা।

এ অঞ্চলের মানুষ জমির মালিক হলেও তরমুজ চাষাবাদের জন্য দক্ষ নোয়াখালীর সুবর্ণচরের মানুষ। সেখানকার কৃষকরা এসে এখানে জমিগুলোয় আবাদ করেন। এতে তারাও বেশ লাভবান হচ্ছেন।

আরও পড়ুন: আগাম তরমুজ চাষে সফল ভৈরবের ৪ কৃষক

Advertisement

তরমুজ চাষি মো. ইমরান জানান, তিনি সুবর্ণচর থেকে ফেনীতে এসে তরমুজ আবাদ করছেন। প্রতিমাসে তিনি বেতন হিসেবে পাচ্ছেন ১৮ হাজার টাকা। এভাবে আরও শত শত শ্রমিক সুবর্ণচর থেকে এসে তরমুজ চাষ করছেন।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, ‘তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে, প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে কৃষি অফিস কাজ করছে। এখানকার জমিগুলো তরমুজ উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী। তরমুজের আকার এবং স্বাদ অতুলনীয়। যে কারণে বাজারে ব্যাপক চাহিদা আছে। এ বছর কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন।’

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসইউ/জেআইএম