রাত জাগার অভ্যাস অনেকের মধ্যেই আছে। কেউ হয়তো কর্মব্যস্ততার খাতিরে রাত জাগেন আবার কেউ কেউ বিনা কারণেই রাত জেগে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারে মশগুল থাকেন।
Advertisement
এমনকি অনেক শিশুরাও এখন রাত ১-২ পর্যন্ত জেগে থাকে পরিবারের বড়দের দেখাদেখি। তবে রাত জাগার এই অভ্যাস শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই।
আরও পড়ুন: চাকরি ছেড়ে সমুচা বেচে দম্পতির দিনে আয় ১৫ লাখ টাকা
ঘুম কম হলে বা অনিদ্রার কারণে অলসতা বাড়ে ও কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না। আবার অনেকের ঘুম না হলে বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এছাড়া শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে ঘুমের অভাবে।
Advertisement
যারা রাত ১২-৩টার মধ্যে জেগে থাকেন ও ভোর ৪টার দিতে ঘুমান, তাদের ঘুমের চক্রটি নষ্ট হয়ে। ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ কাজগুলো সঠিকভাব সম্পন্ন হয় না।
আসলে রাতে অর্থাৎ অন্ধকারে বাড়ে সেরোটোনিন হরমোন। এটি মনকে শান্ত করতে ও ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এই হরমোন দ্রুত চোখের চলাচল (আরইএম) কে প্রভাবিত করে।
আরও পড়ুন: গরমে স্বস্তি পেতে ও ওজন কমাতে পান করুন ৫ পানীয়
যা ইলেক্ট্রোফিজিওলজিক্যাল, নিউরোকেমিক্যাল, জেনেটিক ও নিউরোফার্মাকোলজিক্যাল ভিত্তিতে ঘুমের ক্ষেত্রে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে।
Advertisement
ফলে মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠা বা না ঘুমনোর কারণে শরীর অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া সম্পাদন করতে পারে না, ফলে আপনি দীর্ঘমেয়াদে অসুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
রাত ১২-৩টার মধ্যে না ঘুমালে কী ঘটে শরীরে?
রাত ১২-৩টার আগে না ঘুমালে বা এর মধ্যে ঘুম থেকে জেগে উঠলে সেরোটোনিন হরমোন কমে যায়। এর পাশাপাশি ডোপামিন হরমোনের ঘাটতি হয়। ফলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় ও মস্তিষ্ক বিশ্রাম করতে পারে না।
আরও পড়ুন: হাই প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করবে রান্নাঘরের ৭ খাবার
একই সঙ্গে শরীরের বাকি অংশও বিশ্রাম পায় না ও শরীর নিজেকে পরিষ্কার করতে ও পুনরায় চালু করার সক্ষমতা হারায়। ফলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যেমন-
উদ্বেগ বাড়ে
রাত জাগলে ঘুমচক্র প্রভাবিত হয়। যা শরীরের জন্য এক ধরনের চাপ। এতে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় ও উদ্বেগের সমস্যা বাড়ে। যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের মধ্যে মেজাজের পরিবর্তন ঘটে ঘন ঘন।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা
যারা রাত ১২-৩টা পর্যন্ত জেগে থাকেন, তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। এ ধরনের লোকেরা অল্প বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ ও হার্ট সংক্রান্ত রোগের শিকার হতে পারে। কারণ শরীর অতিরিক্ত চাপ বহন করছে।
আরও পড়ুন: স্ট্রোকের আগে ব্যথাহীন যে লক্ষণ দেখা দেয় চোখে
স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাক
ঘুমের অভাবে হার্টের সমস্যা বাড়তে পারে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা রাত জাগলে রক্তনালি প্রভাবিত হয় ও হঠাৎ করেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
বিষণ্নতার মতো মানসিক রোগ
যারা কম ঘুমায় তারা বিষণ্নতার মতো মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সেরোটোনিন বা হ্যাপি হরমোনের ঘাটতির কারণেই বিষণ্নতা বাড়ে। যা নেতিবাচক চিন্তার জন্ম দিতে পারে।
ফলে দুঃখবোধ ও বিষণ্নতায় জীবন কাটে। দীর্ঘদিন এই সমস্যা নিয়ে থাকলে ওই ব্যক্তি মানসিক রোগীতেও পরিণত হতে পারেন। তাই সুস্থ থাকতে দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র: প্রেসওয়্যার ১৮
জেএমএস/জেআইএম