ক্যাম্পাস

রেজিস্ট্রারের অপসারণ চান এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়। রোববার (১৯ মার্চ) রাজধানীর গ্রিন রোডে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেনের মৃত্যুর জন্য রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমানকে দায়ী করে তার অপসারণের দাবিতে কালো ব্যাচ ধারণ করেন তারা। দুপুর ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল।

Advertisement

আন্দোলনকারীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিক কার্যক্রম, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সবাই একত্রিত হয়েছি। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, যার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই আতঙ্কিত, তাকে অপসারণ না করার পর্যন্ত এখানে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ন্যায্য পাওনা, কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের সহকর্মী ফারুকের মৃত্যুর জন্য যিনি দায়ী সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। তদন্ত কমিটির কাছে সবাই যেন কথা বলতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যারা কথা বলবেন তাদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলেন, দিনের বেশিরভাগ সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটাই। যখন এখানে আমরা নিরাপদ বোধ করতে পারি না, তখন বাসায় গিয়েও এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে থাকি। তাই সবাই মিলে এ মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার চাই। রেজিস্ট্রারকে দ্রুত অপসারণ করে সবার মধ্যে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে তা লাঘব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।

Advertisement

গত সোমবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হোসেন আত্মহত্যা করেন। তার এ আত্মহত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান ও তার সহকারী জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা তামিম জোবায়েরকে দায়ী করে এর বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে আবেদন করেন তার ভাই ফরিদ হোসেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, ফারুকের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে তারা চার দফা দাবি জানান। এরমধ্যে ছিল- এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রেজিস্ট্রারকে তার পদ ও সব কার্যক্রম থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা। একই সঙ্গে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা হয়রানি, মানহানি, অপমান ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা। কতিপয় কর্মকর্তা মিলে আলাদা প্রশাসনিক কাঠামোর বলয় ভাঙা এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদতদাতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। রেজিস্ট্রারের অধীনস্থদের নিয়ম বহির্ভূত কাজে বাধ্য করা, জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত, প্রমোশন আটকানো এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েবসহ সব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তারা।

ঘটনার ৫ দিন পার হলেও এখনো এ ঘটনার জন্য দায়ী রেজিস্ট্রারকে অপসারণ না করায় রোববার এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এ কর্মসূচি চলতে থাকবে বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর কামরুল আহসানের ফোনে একাধিকার কল করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

এমএইচএম/কেএসআর/এএসএম