দিনের শেষে, জীবনে সুখের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নয়। শুধু ব্যক্তিগত জীবনে ভালো থাকলেই কিন্তু আপনি সুখী নন! আপনি কোন দেশ বা পরিবেশে বাস করছেন তার উপরও কিন্তু সুখ নির্ভর করে। সুখের একটি প্রায়শই অবমূল্যায়িত কারণ হলো আমরা যে পরিবেশে বাস করি।
Advertisement
বছরের পর বছর ধরে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি দেশ তার বাসিন্দাদের জন্য কী কী সুযোগ সুবিধা দেয় সেটিও কিন্তু গড় স্তরের সুখের সঙ্হে সম্পর্কযুক্ত।
আরও পড়ুন: ট্রেনের চেইন কখন টানলে জরিমানা দিতে হয়?
ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে প্রতিবছরই বিশ্বের শীর্ষ সুখী দেশের তালিকা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন দেশের মাথাপিছু জিডিপি, সামাজিক সমর্থন স্তর, স্বাস্থ্যকর আয়ু, জীবন পছন্দ করার স্বাধীনতা, উদারতা ও দুর্নীতির উপলব্ধি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করেই সুখের সূচক নির্ধারণ করা হয়।
Advertisement
র্যাংকিংয়ে একটি দেশ যত উঁচুতে থাকবে, সেই দেশের একজন গড় বাসিন্দা তত বেশি খুশি বলে বিবেচিত। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এ বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে সুখী দেশ কোনগুলো-
ফিনল্যান্ড
ইউরোপ স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যা ৫৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬০ জন। জানলে অবাক হবেন, এবার ৬ষ্ঠ বারের মতো দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর ভ্রমণে যে ৫ কাজ করলেই বিপদ
Advertisement
ডেনমার্ক
এই দেশের সুখ সূচক স্কোর ৭.৬২। সুখের সূচকে দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশটি। ডেনমার্ক ধনী ও অত্যন্ত আধুনিক একটি দেশ।
এ দেশের নাগরিকরা ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু জীবনযাত্রার মান বজায় রাখেন। ফ্যাশন, শিল্পকারখানার ডিজাইন, চলচ্চিত্র ও সাহিত্য ডেনীয়রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডের আল্পাইন পর্বতের সৌন্দর্য সবাইকে খুশি ও সুখী করে তোলার জন্য যথেষ্ট। সুইজারল্যান্ড বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে। এই দেশের জনসংখ্যা ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৭।
আরও পড়ুন: সিকিম ভ্রমণে যে ভুল করলে বিপদে পড়তে পারেন
আইসল্যান্ড
সুখী দেশের তালিকায় আছে আইসল্যান্ডও। যদিও সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশ রূঢ়, তবুও দেশটির মানুষ অনেক সুখী। এই দেশের জনসংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার।
নেদারল্যান্ডস
১৭ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৪৪৭ জনসংখ্যার উচ্চ জনসংখ্যা সত্ত্বেও ৫ম স্থান অর্জন করেছে সুখী দেশ হিসেবে। এর আগে ২০১৭ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সুখ প্রতিবেদনে দেশটির বিশ্বের ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ সুখী দেশের মর্যাদা দেওয়া হয়, যা দেশটির জীবনযাত্রার উচ্চমানের প্রতিফলন।
নরওয়ে
নরওয়ের জনসংখ্যা ৫৫ লাখ ১১ হাজার ৩৭০ জন। বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করেছে এই দেশ। নরওয়ের মোট আয়তন ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২০৭ বর্গকিলোমিটার। নরওয়ে ১৯টি রাজ্য (কাউন্টি) নিয়ে গঠিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: নীলাচল ভ্রমণে থাকা-খাওয়া ও যাতায়াত খরচ কত?
নরওয়ে বছরের ৮ মাস বরফের নিচে ঢাকা থাকে। বছরের দুই মাস এখানে সূর্য ওঠে না। নভেম্বরের ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারির ২১ তারিখ পর্যন্ত সময়টাকে তাই ডার্ক পিরিয়ড বলা হয়।
এই সময় আকাশে নর্দার্ন লাইট বা অরোরা বুরিয়াল দেখা যায়। আকাশেল আলোর খেলা দেখতেই সেখানে ভিড় করেন পর্যটকরা।
সুইডেন
সুইডেন ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম স্টকহোম। সুইডেনের আয়তন ৪ লাখ ৫০ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। এটি ইউরোপের তৃতীয় সর্ববৃহৎ দেশ।
সেখানকার মোট জনসংখ্যা ১০ কোটি ২ লঅখ ১৮ হাজার ৯৭১ জন। সুখের সূচকে সুইডেন ৭.৩৬ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে।
লুক্সেমবার্গ
পশ্চিম ইউরোপের একটি স্থলবেষ্টিত দেশ এটি। এর পশ্চিম ও উত্তরে বেলজিয়াম, পূর্বে জার্মানি ও দক্ষিণে ফ্রান্স। লুক্সেমবার্গ এটি ইউরোপের ক্ষুদ্রতম সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি। এর মোট জনসংখ্যা ৬ লাখ ৩৪ হাজার। লুক্সেমবার্গের জনসংখ্যার বেশিরভাগই বিদেশি।
বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকার ৮ম স্থানে আছে দেশটি। সুবিশাল দুর্গ ও পুরোনো শহরটির ব্যতিক্রমী সংরক্ষণের কারণে ১৯৯৪ সালে লুক্সেমবার্গ শহরটিকে তার পুরোনো কোয়ার্টার ও দুর্গগুলোকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড দুইটি প্রধান বৃহৎ দ্বীপ নিয়ে গঠিত, যেগুলিকে উত্তর দ্বীপ ও দক্ষিণ দ্বীপ বলে। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন দেশ নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে ফিজি, টোঙ্গা ও নুভেল কালেদোনি উল্লেখযোগ্য।
পৃথিবীর সর্বাধিক বাসযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের শহরগুলো অন্যতম। বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে নবম স্থানে আছে নিউজিল্যান্ড। ২০২০ সালের আদমশুমারি অনুসারে, সেখানকার জনসংখ্যা ৫ লাখ ৯৩ হাজার ২৩০ জন।
অস্ট্রিয়া
সুখের সূচকে অস্ট্রিয়া ৭ হাজার ২৬৮ স্কোর করেছে ও তালিকায় ১০ তম স্থানে আছে। ২০২২ সালে অস্ট্রিয়ার মোট জনসংখ্যা ৯ লাখ ৬৬ হাজর ৭১০ রেকর্ড করা হয়।
সূত্র: অল টপ এভরিথিং/টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এএসএম