অর্থনীতি

ভোজ্যতেল ৩ লাখ, চিনি সোয়া ২ লাখ টন মজুত

দেশের ছয় শিল্প গ্রুপের কাছে বর্তমানে ৩ লাখ ২ হাজার ১৬৩ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে। আর পাঁচ শিল্পগ্রুপের কাছে চিনি মজুত আছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৩ মেট্রিক টন। এছাড়া ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৫ টন ভোজ্যতেল এবং ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫০ টন চিনি পাইপলাইনে রয়েছে।

Advertisement

‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স’র ষষ্ঠ সভায় উপস্থাপন করা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রোববার (১৯ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সভায় ব্যবসায়ীদের কাছে ভোজ্যতেল ও চিনির মজুত কী পরিমাণ আছে সে তথ্য উপস্থান করা হয়। পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকার চিত্রও উপস্থাপন করা হয়। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ৩ লাখ ২ হাজার ১৬৩ টন ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে। এছাড়া পাইপলাইনে রয়েছে আরও ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪৫ টন।

Advertisement

আরও পড়ুন>> রমজান এলেই দাম বাড়ে, প্রতিশ্রুতি রাখে না ব্যবসায়ীরা

অন্যদিকে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, আব্দুল মোনেম এবং দেশ বন্ধু সুগার লিমিটেডের কাছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৩ দশমিক ৬৮ টন চিনি মজুত রয়েছে। এর বাইরে পাইপলাইনে রয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫০ টন চিনি।

সূত্রটি জানিয়েছে, ভোজ্যতেল ও চিনি সব থেকে বেশি মজুত রয়েছে এস আলম গ্রুপের কাছে। এ গ্রুপটির কাছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ২৬৯ টন ভোজ্যতেল এবং ৮৬ হাজার ৯৮ দশমিক ৬৮ টন চিনি মজুত আছে। এর বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার টন ভোজ্যতেল এবং ৩ লাখ ৮৫ হাজার টন চিনি পাইপলাইনে রয়েছে।

মেঘনা গ্রুপের কাছে ভোজ্যতেল মজুত আছে ৪৬ হাজার ২৩৯ টন। পাইপলাইনে আছে ২২ হাজার টন ভোজ্যতেল। এ শিল্প গ্রুপের কাছে চিনি মজুত আছে ৫০ হাজার টন। আর পাইপলাইনে আছে ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি।

Advertisement

আরেক শিল্পগ্রুপ সিটির কাছে ২৩ হাজার ৮৬৪ টন ভোজ্যতেল এবং ৬৬ হাজার ৮৬৫ টন চিনি মজুত আছে। পাইপলাইনে ভোজ্যতেল আছে ৩২ হাজার টন এবং চিনি ৫৩ হাজার ৫৫০ টন।

আরও পড়ুন>> রমজান ঘিরে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য, দিশেহারা মানুষ

এছাড়া টিকে গ্রুপের কাছে ২১ হাজার ৭৫০ টন, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের কাছে ২৩ হাজার ৯৪১ টন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ২ হাজার ১০০ টন ভোজ্যতেল মজুত আছে। এর বাইরে টিকে গ্রুপের কাছে ৪৬ হাজার টন, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের ৩২ হাজার ৮৪৫ টন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ৩৫ হাজার টন ভোজ্যতেল পাইপলাইনে রয়েছে।

আব্দুল মোনেম’র কাছে চিনি মজুত আছে ১৯ হাজার ১০০ টন এবং ৬০ হাজার টন চিনি পাইপলাইনে আছে। দেশবন্ধু সুগার লিমিটেডের আছে চিনি মজুত আছে ৩ হাজার ৫০০ টন এবং পাইপ লাইনে আছে ৪০ হাজার টন।

এদিকে সভা শেষে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ভোজ্যতেল-চিনির মজুত ও চাহিদা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমাদের যা প্রয়োজন তার মিনিমাম দেড়গুণ তাদের কাছে মজুত রয়েছে। তাদের হাতে আছে ও পাইপ লাইনে আছে। ফলে কোনোভাবেই কোনো সমস্যা হবে না। তেল এবং চিনি এ দুটাই তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। ফলে কোনো সমস্যা হবে।

আরও পড়ুন>> রমজানে ভোগ্যপণ্য সরবরাহে আশাবাদ আমদানিকারকদের

তিনি বলেন, চিনিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক হিসাব-নিকাশ করে দেখেছি চিনির দাম সাড়ে চার টাকার মতো কমানো যায়। আমরা তাদের (ব্যবসায়ী) অনুরোধ করেছি ৫ টাকা কমানোর। তারা আমাদের সঙ্গে এগ্রি করেছে। যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে, সে সুবিধার পণ্য এখনো বাজারে আসেনি, আরও কয়েকদিন লাগবে। তারা কিছুদিন সময় চেয়েছেন। আশাকরি রোজার প্রথম সপ্তাহেই নতুন দামটা চলে আসবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা নিজে থেকে একটা কথা বলেছেন মিলগেটে যে দামে তারা দেয় তার থেকে ৫-৬ টাকা প্রফিট করে দোকানে বিক্রি করে। সেটা চলবেই। তবে তারা নিজ উদ্যোগে ঢাকার পাশাপাশি প্রধান শহরে মিলগেটের প্রাইসে ট্রাক সেল (বিক্রি) করবে।

তিনি বলেন, চিনি যথেষ্ট পরিমাণে আছে, মানুষের মনে ভয় লেগে আছে চিনি নেই। চিনি কিন্তু পাইপ লাইনেও প্রচুর আছে। ফলে চিনি নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা ৫ টাকা কম রেটে মিলগেট থেকে দেশের সব স্থানে চিনি পৌঁছে দেবেন। ব্যবসায়ীদের অবস্থান পজিটিভ আছেন। আমরা তাদের বলেছি, আগামীকাল থেকে মনিটরিং করতে শুরু করবো। নতুন ট্যারিফে পণ্য ছাড় করতে শুরু করেছেন কি না। যদি না করেন তাহলে আমরা বলবো তিনদিনের মধ্যে করতে হবে। সেটা তাদের অনুসরণ করতে হবে।

আরও পড়ুন>> রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমবে

টিপু মুনশি বলেন, আমরা জাতির সামনে একটি কথা বলতে চাই, রমজান সামনে রেখে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমাদের কাছে যে চিনি-তেল আছে, তাতে বর্তমানে বাজারে যে দাম চলছে বা যেটা ঠিক করে দেওয়া আছে, তার চেয়ে বাড়ার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশে প্যানিক হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। প্যানিক হয়ে কেউ কিনতে যাবেন না। আমরা যেভাবে কিনি, সেভাবে কিনবো। যথেষ্ট মজুত আছে।

এমএএস/ইএ/জেআইএম