নুহাশপল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অংকের টাকা এসেছে, যা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে- এমন তথ্য অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে জানান রবিউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। ফোনে তিনি নিজেকে ডেপুটি স্পিকার পরিচয় দেন। এ টাকা পাওয়ার জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানানো হয়। এরপর শাওন বিকাশে টাকা পাঠান। টাকা পাওয়ার পর আসামি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নুহাশপল্লীর অ্যাকাউন্টে অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা পুরো টাকা জমা হয়ে যাবে। তবে অ্যাকাউন্টে আর কোনো টাকা জমা হয়নি।
Advertisement
পরে এ ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন মেহের আফরোজ শাওন। এ মামলায় প্রতারক রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ২ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসিক ইকবাল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত ২৫ জানুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়। ওই অভিযোগপত্রে এসব কথা উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
চোরাই মোবাইলের সিম দিয়ে শাওনকে কলঅভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামি মো. রবিউল ইসলামের ছেলে সিয়াম ২০২১ সালে মামলার সাক্ষী ওমর ফারুকের ব্যবহৃত মোবাইল চুরি করে। চুরি যাওয়া মোবাইলে ফারুকের ব্যবহৃত দুটি সিম সংযোগ দেওয়া অবস্থায় ছিল। কিছুদিন পর ওমর ফারুক তার মোবাইল উদ্ধার করেন এবং তার ব্যবহৃত একটা সিম পুনরায় উত্তোলন করেন। কিন্তু ওমর ফারুকের আরেকটা সিম আসামি রবিউল ইসলামের ছেলে সিয়ামের কাছে থেকে যায়।
আরও পড়ুন: প্রতারকের খপ্পরে মেহের আফরোজ শাওন, খোয়ালেন ৩২ হাজার টাকা
Advertisement
২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল আসামি রবিউল ওই সিম দিয়ে মেহের আফরোজ শাওনকে কল দেন। শাওন কল রিসিভ করলে আসামি রবিউল নিজেকে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার পরিচয় দেন।
যেভাবে শাওনের সঙ্গে প্রতারণা করেন রবিউলনুহাশপল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অংকের টাকা এসেছে। বর্তমানে এ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। এমন তথ্য শাওনকে জানান আসামি রবিউল। এরপর রবিউল তাকে আরেকটি নম্বর দেন। এ নম্বরটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের বলে জানান। দ্রুত ওই নম্বরে কল দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। শাওন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরিচয়দানকারী ব্যক্তির মোবাইলে কল দেন।
আরও পড়ুন>> অভিনেত্রী শাওনের সঙ্গে প্রতারণা: রিমান্ড শেষে রবিউল কারাগারে
কল রিসিভ করে উপসচিব পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি জানান, ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি কিছু ফি দিতে হবে। তিনি একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে তাতে টাকা পাঠাতে বলেন। এছাড়া মেহের আফরোজ শাওনের সঙ্গে আসামি রবিউলের একাধিক বার কথা হয়। এরপর শাওন আসামির দেওয়া বিকাশ মোট ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা পাঠান। বিকাশে টাকা নেওয়ার পর আসামি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নুহাশপল্লীর অ্যাকাউন্টে অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা পুরো টাকা জমা হয়ে যাবে। তবে অ্যাকাউন্টে আর কোনো টাকা জমা হয়নি।
Advertisement
আরও পড়ুন: শাওনের টাকা হাতিয়ে নেওয়া সেই প্রতারক রিমান্ডে
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেফতার আসামি মো. রবিউল ইসলাম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার পরিচয় দিয়ে মামলার ভুক্তভোগীকে ফোন করেন, যা পেনাল কোডের ৪১৯ ধারার অপরাধ। আসামি নুহাশপল্লীর উন্নয়নের জন্য বড় অংকের অনুদান দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা আত্মসাৎ করেন, যা পেনাল কোডের ৪০৬ ধারার অপরাধ।
জেএ/এএএইচ/জেআইএম