ভাবির সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া দেখে ফেলায় স্ত্রী জহুরা খাতুনকে (২৫) হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শ্বশুর, ভাসুর ও জায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের গোসাইডাঙ্গী গ্রামে।
Advertisement
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ইউনিয়নের জয়ন্তী গ্রামের কলমিপাড়া এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যৌতুক না পেয়ে ও ভাবির সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া দেখে ফেলায় গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় গৃহবধূ জহুরা খাতুনকে তার স্বামী ইমরান বিশ্বাস, শ্বশুর আজগর বিশ্বাস, জা নাজমা খাতুন ও ভাসুর শহিদুল বিশ্বাস মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তারা।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় তিন বছর আগে জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের গোসাইডাঙ্গী গ্রামের আজগর বিশ্বাসের ছেলে ইমরান বিশ্বাসের সঙ্গে কলমিপাড়া এলাকার মৃত রহমত আলীর মেয়ে জহুরা খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে আসছিল। প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকা দিয়ে ইমরানকে কসমেটিক্সের দোকান করে দেন জহুরার বাড়ির লোকজন। এরইমধ্যে ইমরান তার ভাবি নাজমা খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের দেখে ফেলায় গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় জহুরা খাতুনকে তার স্বামী, শ্বশুর, জা ও ভাসুর মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
Advertisement
তারা আরও জানান, এ ঘটনায় ৯ মার্চ নিহত জহুরার ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। উক্ত মামলায় শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান বলেন, বিয়ের পর থেকেই তার বোনের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোটা অংকের যৌতুক দাবি করতে থাকে। যৌতুক না পেয়ে তারা তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে।
জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সকিব খান টিপু বলেন, মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, জহুরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। থানায় মামলার পর শ্বশুর আজগরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Advertisement
আল-মামুন সাগর/এফএ/এএসএম