দামের দিক দিয়ে দেশে ইতিহাস গড়লো রড। নির্মাণশিল্পের অন্যতম এই উপকরণটির দাম এখন লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। গত পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রতি টন রডের দাম বেড়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা।
Advertisement
সবশেষ বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেল থেকে খুচরা বাজারে প্রতি টন রড কিনতে হচ্ছে এক লাখ ৫০০ টাকায়। ফলে দেশের শীর্ষ রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম, একেএস, জিপিএইচ ব্র্যান্ডের রড এখন লাখ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে দেশীয় ইস্পাত শিল্পের আরেক ব্র্যান্ড কেএসআরএমের লোহার রড পাওয়া যাচ্ছে লাখ টাকার কমে। সবশেষ বৃহস্পতিবার সকালে এই ব্র্যান্ডের রড টনপ্রতি ৯৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রড-সিমেন্টের খুচরা ব্যবসায়ী, ডিলার, মিল মালিক এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এক মাসের বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এখন প্রতি টন এমএস রড বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ৫০০ টাকায়। মাত্র এক মাস আগেও এ রডের দাম ছিল ৯০ হাজার টাকার ঘরে, অর্থাৎ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা। আর পাঁচ মাস আগেও এই রডের দাম ছিল টনপ্রতি ৮৪-৮৫ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ রড-সিমেন্টের দাম
Advertisement
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপের মূল্যবৃদ্ধি, ফ্রেইট চার্জ এবং ডিজেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে রডের বাজারে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর শাহ আমানত সেতু-বহদ্দারহাট সংযোগ সড়কের বাকলিয়া এলাকার রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী আকিল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে রডের দাম হু হু করে বাড়ছে। এক মাসের ব্যবধানে প্রতি টন রডে ১০-১২ হাজার টাকা বেড়েছে। এখন কয়েকটি কোম্পানির রড এক লাখ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ব্রিজের রড নিজেই বিক্রি করে দিয়েছেন ঠিকাদার!
বর্তমানে নির্মাণকাজ আগের চেয়ে বেড়েছে। ১০-১৫ দিন আগেও বুকিং দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে না রড। সামনে রডের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
Advertisement
চট্টগ্রামের পটিয়ার খুচরা রড-সিমেন্ট বিক্রেতা ও এজেন্ট মেসার্স খাজা স্টিলের ম্যানেজার লতিফুর রহমান বাবু জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার বিকেলে বিএসআরএম ব্র্যান্ডের রড প্রতি টন এক লাখ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে একেএস ও জিপিএইচ ইস্পাতের রডের দামও কাছাকাছি। শুধু কেএসআরএমের রড বিক্রি হচ্ছে ৯৮ হাজার টাকায়।
আরও পড়ুন: ইতিহাসে প্রথমবার ৯০ হাজার টাকা ছাড়ালো রডের টন
তিনি বলেন, অনেক কোম্পানিতে রডের মজুতও নেই। মজুত না থাকায় জোগানে ঘাটতি হচ্ছে। ফলে রডের দাম কমাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশের শীর্ষ রড উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের বিপণন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে ডলারের সংকট রয়েছে। চাইলেই স্ক্র্যাপ আমদানির জন্য এলসি খোলা যাচ্ছে না। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে স্ক্র্যাপ জাহাজের বুকিং রেট বেড়ে গেছে। পাশাপাশি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেড়েছে জাহাজভাড়াও। এতে স্ক্র্যাপের আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, যা রড উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে। ফলে বাজারে বাড়ছে রডের দাম।
ইকবাল হোসেন/জেডএইচ/জেআইএম