ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ‘প্যাথলজিক্যাল চোর’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এরা জাতীয় নির্বাচনেই শুধু ভোট চুরি করেনি, সুপ্রিম কোর্ট বারে, ঢাকা বারসহ সর্বত্র ভোট চুরি করছে। এদের চুরি করেই চলতে হয়।
Advertisement
বুধবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন রচিত ‘আমার রাজনীতির রোজনামচা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামীলীগ বরাবরই গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করেছে। এদের একমাত্র লক্ষ্য চুরি। চুরি ছাড়া আর কিছু নেই। এরা প্যাথলজিক্যাল চোর। দেশকে চুরি করে ফোঁকলা করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানির পর নতুন চুরির খাত পাতাল রেল। এখন কোনোখানেই জবাবদিহি নেই।
আরও পড়ুন>> ক্ষমতার মসনদ যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়বে: ফখরুল
Advertisement
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা আগের রাতে ফলস ব্যালটে ভোট কেটে রেখেছে। শুনতে পেলাম এখন নাকি গোলযোগ হচ্ছে। এমনকি আমাদের দলের পক্ষে ৭ বার যিনি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাকে আঘাত করা হয়েছে এবং সহস্রাধিক আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুধু মুখেই সরকারের সাফল্য উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ আমিষ খেতে পারে না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে।দেশের মানুষ সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এরা সমাজ, সংস্কৃতি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে কেড়ে নিয়ে দেশকে চরমভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন>> সুপ্রিম কোর্টে পুলিশের বেপরোয়া হামলার শিকার সাংবাদিকরা
Advertisement
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা ইতিহাস বিকৃতি করে ক্ষমতায় থাকতে তাদের মতো করে যেটা প্রয়োজন সে ইতিহাস তৈরি করে। তাই আজ আমরা যে কঠিন লড়াই করছি সেটা ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে, যারা মানুষকে মযার্দা দেয় না, ইতিহাসের স্বীকৃতি দেয় না, স্বাধীনতা-গণতন্ত্র ও সংবিধান বিশ্বাস করে না। অথচ আজকে যখন পাকিস্তানি শাসনামলের সঙ্গে তাদের শাসনামল নিয়ে পার্থক্য তুলে ধরা হয় তখন গায়ে আগুন লেগে যায়।
আরও পড়ুন>> আশা করবো নির্বাচনে বিএনপি যেন ৩০টির বেশি আসন পায়
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিজেদের দেখা একজন শ্রদ্ধাভাজন ও দেশপ্রেমিক আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন অত্যন্ত কঠিন সময়ে আমরা যারা রাজনীতি করছি, আমরা যা পারিনি সেটা তিনি লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। রাজনীতির সঠিক ইতিহাস তথ্যে-উপাত্তে-বইয়ে তুলে ধরেছেন, যা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দেবে। সুকৌশলে তুলে ধরেছেন নিজের মতামত, যা সমকালীন রাজনীতির জন্য যথেষ্ট। কেননা এটা সবাই পারেন না। তিনি অত্যন্ত আন্তরিক একজন মানুষ। যখন যা করেন আন্তরিকতার সঙ্গেই করেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা যখন প্রতিনিয়ত নানা অনিশ্চিয়তার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি, তখনও খন্দকার মোশাররফ ঠান্ডা মাথায় সবকিছু সমাধান করে যাচ্ছেন। আমার যখন কোনো কিছু সহজে বুঝে উঠতে পারছি না, তখন ওনার কাছে ছুটে যাই, কথা বলি এবং সমাধান পাই। সঠিক পথ পাই। একটা আস্থা তৈরি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে খন্দকার মোশরারফ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/ইএ/জিকেএস