কৃষি ও প্রকৃতি

জামালপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তুলা চাষ

জামালপুরে জেগে ওঠা ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে দিন দিন বেড়েই চলেছে তুলা চাষ। একসময়ের অনাবাদি ও পতিত জমিতে কোনো কিছু আবাদ না হলেও তুলা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। অন্য ফসলের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

Advertisement

তুলা উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলা সদরের পিয়ারপুর, গোপালপুর, ঘোড়াধাপ, পাথালিয়াচর, নাউভাঙ্গাচর, গুয়াবাড়িয়া, জঙ্গলদীচরসহ মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলার বনাঞ্চল-চরাঞ্চলে ৩শ হেক্টর জমিতে সিবি-১২, সিবি-১৪, সিবি-১৫, রুপালি-১, ডিএম-৪, শুভ্র-৩, হোয়াইট গোল্ডসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে।

যা গতবারের তুলনায় ২৫ হেক্টর বেশি। বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ করে ১২-১৫ মণ ফলনের আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ১ মণ তুলার বাজারমূল্য ৩৫০০-৩৮০০ টাকা। এখন তুলা সংগ্রহের মৌসুম। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে তুলার বাম্পার ফলন হবে এ বছর।

আরও পড়ুন: বরই চাষে ৫ লাখ টাকা আয় করেন আজাদুর 

Advertisement

পাথালিয়াচর এলাকার বাসিন্দা ওয়াহেজ মিয়া (৭০) অল্প কিছুদিন হলো তুলা চাষ করছেন। অনেকেই ১৫-১৬ বছর ধরে চাষ করছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘২২ শতক জমিতে তুলা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ৯ হাজার টাকা। গত বছর একই জমিতে খরচ হয়েছিল ৭ হাজার টাকা। বর্তমানে এক মণ তুলার দাম ৩৮ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ১০-১২ মণ তুলা পাওয়া যায়। সমস্যা হলো তুলার একটা মৌসুম উঠতে সময় লাগে প্রায় ৯ মাস। এজন্য অনেকে চাষ করতে চান না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে অনেকের।’

তিনি বলেন, ‘আগের তুলনায় তুলা চাষ বেড়েছে। একসময় ২৮ জন কৃষক তুলা চাষ করলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ জনে। উন্নত জাতের তুলার বীজসহ কারিগরি সহায়তা পেলে মানুষ তুলা চাষে আগ্রহী হবে।’

তবে গত বছরের তুলনায় সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কাও করছেন অনেক কৃষক। তারা জানান, শ্রমিক খরচ বাড়তি, সারের দাম বাড়তি। কিন্তু বাজারে তুলার দাম বাড়েনি। তাই ন্যায্য মূল্যের দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন: পাটের বৈশিষ্ট্য ও গবেষণায় অগ্রগতি 

Advertisement

জামালপুর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সালাহউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষকদের সার, বীজ ও কীটনাশক ফ্রিতে সরবরাহ করা হয়েছে। প্রতিবছর বীজ বপন থেকে শুরু করে মার্কেটিং পর্যন্ত কৃষকদের কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘তুলা উৎপাদন বাড়ানো গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে। বাঁচবে বৈদেশিক মুদ্রা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় তুলার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।’

মো. নাসিম উদ্দিন/এসইউ/জিকেএস