সব ধরনের পণ্য মোড়কে উল্লিখিত সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্যে বিক্রি হলেও সিগারেট ও বিড়ির ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। মোড়কে লেখা সর্বোচ্চ দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হওয়ায় সরকার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
Advertisement
রোববার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কনফারেন্স হলে ‘তামাক কর নীতি ব্যবস্থায় কোম্পানির ফাঁকি: জনস্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত জানায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষক সুশান্ত সিনহা। তিনি বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো ‘আইন সংশোধন হলে রাজস্ব কমে যাবে’ বলে ভয় দেখায়। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস এবং ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধনের সময়ও তারা একই ধরনের প্রচারণা চালিয়েছে। বাস্তবতা হলো, গত ১০ বছরে তামাক খাত থেকে সরকারের রাজস্ব ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইন প্রণয়নের ফলে তামাক ব্যবহারের হার কমলেও রাজস্ব আয় কখনোই পূর্বের বছরের তুলনায় কমেনি।
Advertisement
আরও পড়ুন: সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দ্রুত পাসের দাবি
তিনি আরও বলেন, সিগারেট ও বিড়ি প্যাকেটের মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণের খসড়াটি পাস করার পাশাপাশি একটি তামাক করনীতি প্রণয়ন করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তেব্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খন্দকার বলেন, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল তুলে ধরার পাশাপাশি জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও তথ্য দিয়ে নতুন নতুন প্রতিবেদনের মাধ্যমে সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি পুরো দেশের জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত।
এসময় আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিদিন সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত চলে যাচ্ছে। যা মাসে প্রায় ৬০০ কোটি আর বছরে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩০০ কোটি টাকা। এ রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ হলে সেই টাকা দিয়ে সারাদেশের মানুষের হৃদরোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে করা সম্ভব হবে।
Advertisement
এসএম/এমএইচআর/জেআইএম