দেশজুড়ে

দুদকের অভিযানেও কমেনি ভোগান্তি

পাসপোর্ট করতে প্রতিদিন কয়েকশ মানুষ কয়েকশ মানুষ ভিড় করেন ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। তবে সেবা পেতে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে এ পাসপোর্ট অফিসে। দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানের পরও ভোগান্তি না কমার অভিযোগ সেবাপ্রার্থীদের।

Advertisement

অভিযোগ আছে, পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু কম্পিউটারের দোকান। অফিসে কাগজপত্র ভুল দেখানো হলেও এসব দোকানে গেলে বাড়তি টাকার বিনিময়ে মুহূর্তেই ঠিক হয়ে যায়। যা পরে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে গেলে কোনো হয়রানি হতে হয় না। এর সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজশ আছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন। শুরুতেই পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন স্বর্ণা কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালানো হয়। সেসময় ব্যাংক ড্রাফটের নামে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া, দালালের মাধ্যমে মানুষকে হয়রানির অভিযোগে দোকান মালিককে আটক করা হয়। পরে তাকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুদক।

সে সময় অফিসে পাসপোর্ট করতে আসা মানুষের হয়রানির নানা অভিযোগ শুনে অফিসের সব কর্মকর্তা কর্মচারীকে ভবিষ্যতে অনিয়ম থেকে দূরে থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। সবার সামনে ভবিষ্যতে মানুষকে হয়রানি ও অনিয়ম করবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান দোকান মালিক। এরপর কিছুটা কমে ভোগান্তি ও দালাল দৌরাত্ম্য।

Advertisement

কিন্তু কিছু দিন পর আবারো চিত্র পাল্টে যায় পাসপোর্ট অফিসের। এখনো দালালদের দৌরাত্ম্য কমেনি বলে অভিযোগ সেবাপ্রার্থীদের। যারা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছেন, তারা দ্রুত পেয়ে যাচ্ছেন পাসপোর্ট। বাকিদের পাসপোর্টের জন্য ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন।

পাসপোর্ট নিতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পাসপোর্ট হাতে পেতে কয়েকটা দিন দেরি হয়েছে। তবে খুব বেশি ভোগান্তি হয়নি।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী অভিযোগ, পাসপোর্টের জন্য কাগজ জমা দিতে এসে সাত দিন ধরে ঘুরছেন তিনি। কাগজ ঠিক নেই, ফরমে ভুল, নাম ভুল হয়েছে এমন নানা অজুহাতে অফিসের লোকজন খালি ঘোরাচ্ছেন তাকে।

ইমরান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘সব নিয়ম অনুসরণ করে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। ছবি তুলেছি এবং আঙুলের ছাপও দিয়েছি। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়েছে। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও কী কারণে পাসপোর্ট পাচ্ছি না জানানো হচ্ছে না। দিনে পর দিন ঘুরেই যাচ্ছি।’

Advertisement

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. সাকাওয়াত হোসাইন।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পাসপোর্ট তৈরির ধরন দুটি। একটি ১১ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে হলে ৮ হাজার ২৫ টাকা প্রয়োজন হবে। আরেকটি আছে আবেদন করার পর ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাদের কাগজপত্র যদি ঠিক থাকে তাহলে সঠিক সময়ে পেয়ে যান।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এ পাসপোর্ট কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা দাবিগুলো করছেন, তা সঠিক নয়। এখানে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কোনো টাকা নেওয়া হয় না।’

এসজে/জেআইএম