মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির গাড়ি থেকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা লুট করে নেন ডাকাতরা। বিপুল এ অর্থ ছিল চারটি ট্রাংকের মধ্যে। ডাকাতরা দুটি ট্রাংকের টাকা দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি বাজারের ব্যাগে ভরে নেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার মতো আর কোনো বস্তা বা ব্যাগ সঙ্গে না থাকায় বাকি দুই ট্রাংকের টাকা ডাকাত সদস্যরা গাড়িতে রেখে পালিয়ে যান।
Advertisement
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
আরও পড়ুন: আরও দুই কোটি ৫৩ লাখ টাকা উদ্ধার, গ্রেফতার ৮
তিনি জানান, ডাকাতরা টাকাভর্তি দুটি বস্তা ও চারটি বাজারের ব্যাগ নিয়ে যায়। বাকি দুই ট্রাংক ও একটি বাজারের ব্যাগে থাকা টাকা তারা নিতে পারেনি।
Advertisement
হারুন অর রশীদ বলেন, আসামিরা গত ৮ মার্চ সিলেট যাওয়ার জন্য একটি হাইস মাইক্রোবাস ভাড়া করে। পরদিন ৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৫টায় ড্রাইভারকে কুর্মিটোলা যাত্রী ছাউনির সামনে আসতে বলা হয়। গাড়ি আসার পর পেছনের সিট ঠিক করতে বলে আসমিরা। চালক পেছনে গেলে তার হাত-পা ও চোখ বেঁধে ডাকাতরা গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকেন ডাকাত সদস্যরা। পূর্ব তথ্যমতে নির্দিষ্ট নম্বরের গাড়িকে অনুসরণ করার জন্য অপেক্ষার এক পর্যায়ে মানি প্ল্যান্টের গাড়িটি এলে তারা সেটিকে অনুসরণ করে।
আরও পড়ুন: ১১ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া গাড়ি কেন নির্জন রাস্তায়
হারুন অর রশীদ বলেন, ডাকাতরা মানি প্ল্যান্টের গাড়িকে একবার সামনে অতিক্রম করে আবার পেছনে চলে যায়। নির্জন জায়গায় যাওয়ার পর এক পর্যায়ে টক্কর লাগিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু করে। পরে মানি প্ল্যান্টের গাড়িটিরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা চলে যায়।
Advertisement
এরপর ডাকাত সদস্যরা টাকাভর্তি গাড়ি নিয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় যায়। পথে পাঁচজন সঙ্গীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে গাড়িতে থাকা দুটি ট্রাংক থেকে টাকা বের করে দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি বাজারের ব্যাগে ভরে নেয় তারা। গাড়ির ভেতরেই নিজেরা পোশাক পরিবর্তন করে।
ডিবিপ্রধান বলেন, টাকা বহন করার মতো আর কোনো ব্যাগ না থাকায় বাকি দুটি ট্রাংকে থাকা টাকা তারা নিতে পারেনি। ডাকাতিতে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে।
আরও পড়ুন: অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই
তিনি বলেন, আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডে আসার পর বিস্তারিত আরও তথ্য জানা যাবে।
এদিকে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত আটজনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।
এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ দুই কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা।
রাজধানীর মিরপুর, বনানী, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডাচ্-বাংলার সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা
গ্রেফতাররা হলেন- মো. সানোয়ার হাসান (২৮), মো. ইমন ওরফে মিলন (৩৩), মো. আকাশ মাদবর (২৫), সাগর মাদবর (২২), মো. বদরুল আলম (৩৩), মো. মিজানুর রহমান (২০), মো. সনাই মিয়া (২৮) ও এনামুল হক বাদশা (২৬)।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস