লালমনিরহাটের পাঁচ মাস ধরে বৃষ্টিপাত নেই। শুকিয়ে আছে নদী-নালা ও খাল-বিল। ফলে ভুট্টা, বোরো ধানসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও সেচ দিয়ে চাষে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। তাই বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় লোকসান নিয়ে হতাশায় ভুগছেন জেলার পাঁচ উপজেলার লক্ষাধিক কৃষক।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের হার শূন্যের কোঠায়। খরা অনাবৃষ্টির কারণে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কৃষি ক্ষেত্রে। বাড়তি খরচের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কৃষকদের।
জেলাজুড়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বোরো ধান, ভুট্টা, বিভিন্ন শাক সবজির আবাদ সেচ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। জেলায় কয়েক লাখ কৃষক সেচযন্ত্র দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করছেন। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। কৃষি উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আবাদি জমিও সেচ সংকটে পড়ছে।
এছাড়া তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, রত্নানাই নদীর পানি শুকিয়ে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন।
Advertisement
তিস্তা চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তার জেগে ওঠা চরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুই একর জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। আকাশের বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভুট্টাক্ষেতে সেচ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডিজেল তেলের দাম বাড়ায় বাড়তি খরচে সেচ দিতে হচ্ছে। জানি না এবছর ভুট্টার কেমন দাম পাবো।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কৃষক মহসিন আলী বলেন, ‘কয়েক মাস থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় ভুট্টা, মরিচ, শাক সবজি নিয়ে বিপাকে আছি। শুকনো আবহাওয়া জমিতে প্রচুর পরিমাণে পানি সেচ দিচ্ছি। টাকাও খরচ হচ্ছে প্রচুর। আবার বোরো মৌসুম চলছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা হতাশায় ভুগছি।’
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়ার কৃষক রাজু মিয়া বলেন, ‘এবছর পাঁচ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। বৃষ্টির না হওয়ায় অতিরিক্ত খরচ করে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। বোরো মৌসুমও চলছে এখন।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছর মার্চ মাসজুড়ে খরার প্রবণতা আছে। যেহেতু কয়েক মাস ধরে বৃষ্টিপাত নেই। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি সেচযন্ত্র চালু রাখার জন্য। পাশাপাশি এ মাসেই একটি ঝড়ের আশঙ্কা আছে। তবে জেলাজুড়ে খরার কারণে কোনো ফসলের ক্ষতি হয়নি। এমন কোনো খবর আমরা পাইনি।’
Advertisement
এসজে/জিকেএস