অর্থনীতি

মেগা প্রকল্প পরিদর্শনে যোগ হচ্ছে ড্রোন

বর্তমানে দেশে চলমান ও সমাপ্ত হওয়া মেগা প্রকল্পের সংখ্যা আটটি। চলমান প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন ও সমাপ্ত হওয়া প্রকল্পে কোনো ত্রুটি আছে কি না তা যাচাই করতে ড্রোন ব্যবহার করবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। একই সঙ্গে একটি মেগা প্রকল্প বছরে তিনবার পরিদর্শন করতে হবে। চলতি বছরের মার্চ থেকেই কার্যকর হবে এ নির্দেশনা।

Advertisement

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সম্প্রতি এসব নির্দেশনা দিয়েছে। আইএমইডি জানায়, চলমান ফাস্ট ট্র্যাক (মেগা) প্রকল্পের সংখ্যা আটটি। এগুলো হলো- পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (মেট্রোরেল), পদ্মা বহুমুখী সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্রাক নির্মাণ, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প।

আরও পড়ুন>> এগিয়ে যাচ্ছে মেগা প্রকল্পগুলো, সুফলের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ 

আইএমইডি জানায়, চলতি বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) অনুযায়ী তৃতীয় কোয়ার্টারে প্রতিটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প পরিদর্শন সম্পন্ন করতে হবে। মনিটরিং রিপোর্ট পরিবীক্ষণ ও ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের টাস্কফোর্সও পাঠাতে হবে ইআরডি বরাবর। টাস্কফোর্সের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে এ সংক্রান্ত আপডেটেড কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। চলমান অনেক প্রকল্পই নিয়ম অনুযায়ী পরিদর্শন করা হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাকি ছয় মাসে দুটি পরিদর্শন অবশ্যই করতে হবে। বেশিও পরিদর্শন করা যেতে পারে। প্রয়োজনে মেগা প্রকল্প পরিদর্শনে ড্রোন ব্যবহার করতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন>> ‘না ভেবে মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হবে’ 

আইএমইডি জানায়, প্রকল্প পরিদর্শনে ড্রোন ব্যবহার, গাড়ি ব্যবহার ও ল্যাব টেস্ট নিয়ে আলোচনা হয়। পরে প্রকল্পের সঠিক পরিবীক্ষণের জন্য ড্রোন ব্যবহার ও ল্যাব টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ল্যাব টেস্টের জন্য বরাদ্দ রয়েছে, এটির যথাযথ ব্যবহার প্রয়োজন বলে তাগিদ দেয় আইএমইডি। আইএমইডির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দক্ষতা ও মানোন্নয়নে নিয়মিত প্রশিক্ষণ আয়োজনের ধারা অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়।

আইএমইডি নির্দেশনা দিয়ে জানায়, প্রকল্প পরিদর্শনে ড্রোন ব্যবহার ও গাড়ি ব্যবহারের জন্য সেক্টরভিত্তিক রোস্টার তৈরি করতে হবে। প্রকল্পের প্রয়োজনে উপকরণসমূহ ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে পরিবীক্ষণের আবশ্যকতা থাকায় সব সেক্টরে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

ড্রোন ব্যবহার প্রসঙ্গে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, মেগা প্রকল্পে ড্রোন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে অন্য প্রকল্পেও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। যেমন পদ্মা সেতু খালি চোখে পরিদর্শন অনেক সময় সম্ভব নয়। কিন্তু ড্রোন ব্যবহার করে সব জায়গায় পরিদর্শন সম্ভব।

Advertisement

আরও পড়ুন>> মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমলেও এডিপির আকার বাড়ছে 

‘কিছু প্রকল্প ফিজিক্যালি দেখা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ড্রোন দারুণ ভূমিকা পালন করবে। দেশের উন্নয়নে মেগা প্রকল্প দারুণ ভূমিকা রাখছে। এসব প্রকল্প যত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে ততই দেশের জন্য মঙ্গল। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি মেগা প্রকল্প বছরে তিনবার পরিদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনে আমিও সরেজমিনে পরিদর্শন করবো।’

চলমান প্রকল্প পরিদর্শন২০২২-২৩ অর্থবছরে আইএমইডি লক্ষ্যমাত্রা ৫৮৫টি এবং এপিএতে চলমান প্রকল্প পরিদর্শনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫০টি। সেক্টরগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত চলমান প্রকল্পের প্রতিবেদন জারি করা হয়েছে মাত্র ২৭০টি। জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিদর্শন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০২টি। এর মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ২৭০টি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৩২টি কম হয়েছে। যে সব সেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি এ বিষয়ে সেক্টর প্রধান-মহাপরিচালককে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইএমইডি।

এমওএস/এএসএ/জিকেএস