নাসায় ফের ডাক পেয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ‘টিম অলিক’। স্পন্সর না থাকায় সেখানে সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভিসা জটিলতায় ২০১৯ সালে নাসার প্রোগ্রামে অংশ নিতে না পারলেও এবার ভিসা পেয়েছে অলিকের সদস্যরা।
Advertisement
টিম অলিকের সদস্য এস এম রাফি আদনান বলেন, ২ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো নাসায় যাওয়ার ডাক পেয়েছি আমরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভিসাও হাতে পেয়েছি। তবে আর্থিক সমস্যায় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করাটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফান্ড রাইজিংয়ের বিষয়ে আমাদের স্পন্সর ‘বেসিস’ অপারগতা প্রকাশ করেছে। এখন আমরা স্পন্সর খুঁজছি। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে টাকা সংগ্রহের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছি।
রাফি বলেন, ১৪-১৬ মার্চ নাসার প্রোগ্রাম চলবে। ১২ মার্চের মধ্যে আমাদের ফ্লাইট বুকিং করতে হবে। সেখানে আমরা এক সপ্তাহ অবস্থান করবো।
তিনি আরও বলেন, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ২০১৯ সালে ১৯ জুন আমরা প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছি। ভিসা জটিলতায় সে বছর যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে করোনার কারণে ডাক পেতে বিলম্ব হয়। গত ২ ডিসেম্বর টিম অলিককে নাসায় আমন্ত্রণ জানায় নাসা।
Advertisement
ফান্ড সংগ্রহের ব্যাপারে শাবি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাফি আদনান বলেন, এ বিষয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জড়িত না থাকায় আমরা জানাইনি। আর নাসায় যাওয়ার ব্যাপারে প্রথম থেকেই ‘বেসিস’ জড়িত। ৭ মার্চ বেসিস স্পন্সর করতে পারবে না বলে জানায়। এ জন্য আমরা পাবলিকলি টিম অলিকের পেজে স্পন্সরের জন্য আবেদন জানিয়েছি। এতে যে কেউ এগিয়ে আসতে পারেন।
টিম অলিকের সদস্যরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এস এম রাফি আদনান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজী মইনুল ইসলাম, আবু সাবিক মেহেদী ও একই বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তারা (টিম অলিক) এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফজলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনোভাবে অবহিত করেনি। অবহিত করলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম।
Advertisement
জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষের দিকে নাসা আয়োজিত স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮ এ ‘টিম অলিক’ অংশগ্রহণ করে। যেখানে বিশ্বের ৭৯টি দেশের বাছাইকরা দুই হাজার ৭২৯ টিমকে পেছনে ফেলে শীর্ষ চারে স্থান করে নেয় ‘টিম অলিক’। এ চ্যালেঞ্জে নাসার দেওয়া তথ্য ব্যবহার করে একটি অ্যাপ তৈরি করে টিম অলিক। ‘লুনার ভিআর’ নামের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে। যার মাধ্যমে চাঁদে এনভায়রনমেন্ট কেমন, তাপমাত্রা কেমন থাকে, কালার পরিবর্তন, চাঁদে যা আছে (যা আগে কেউ দেখেনি), চাঁদ থেকে সূর্যের ছবি কেমন হয় ইত্যাদি ব্যাপারগুলো মিলে এ প্রজেক্ট ছিল। যা বেস্ট ডেটা ইউটিলাইজেশন ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে।
অ্যাপস চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় নাসার ডাক পেয়ে ভিসা জটিলতায় টিম অলিকের সদস্যরা যেতে না পারলেও প্রতিনিধি হিসেবে সে সময় নাসার অনুষ্ঠানে যোগ দেন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি সালমা সিদ্দিকা মাহাতাব, মো. আবুল খায়ের, হাইটেক পার্কের ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আবদুল হাই, আইডিয়া প্রোজেক্টের কাজী হোসনে আরা ও আইসিটি ডিভিশনের প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একরামুল হক, বেসিসের পরিচালক দিদারুল আলম সানি ও বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান।
নাঈম আহমদ শুভ/আরএইচ/জেআইএম