অর্থনীতি

জীবনের লক্ষ্য যাই হোক, সিরিয়াসলি নেবেন: আহসান খান চৌধুরী

জীবনের লক্ষ্য যাই হোক, সেটা সিরিয়াসলি নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী।

Advertisement

তিনি বলেন, যাই করুন না কেন, ব্যবসা বা চাকরি- আপনাদের জীবনের লক্ষ্য সিরিয়াসলি নেবেন। আমি যখন ৩২ বছর আগে আমার বাবার ব্যবসায় জয়েন করেছিলাম (যুক্ত হই) তখন ব্যবসার পরিধি ছিল এক কোটি টাকা। ৩২ বছর পর আজ আমার বাবার ব্যবসার পরিধি ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

আরও পড়ুন>>> বর্ষসেরা উদ্যোক্তা হলেন প্রাণ-আরএফএল-এর সিইও আহসান খান চৌধুরী

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বেলা ১১টায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বক্তৃতামালায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন’ শীর্ষক বক্তৃতামালার ১৫তম পর্ব অনুষ্ঠিত হলো আজ। অনুষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।

তিনি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অগ্রযাত্রা ও ব্যবসার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন আইডিয়া, পরামর্শ, ‘প্রাণ’ সম্পর্কে তাদের মতামত আহসান খান চৌধুরীকে জানান। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়।

আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমি যখন মিটিংয়ে যাই, আমি চিৎকার করে সবাইকে জিজ্ঞেস করি প্রাণ-এর মালিক কে? মানুষ (কর্মীরা) তখন চিৎকার করে বলে আমরা সবাই প্রাণ-এর মালিক। আপনিও যখন কোনো কোম্পানিতে কাজ করবেন, তখন আপনার প্রতিষ্ঠানকে ওন (ধারণ করা) করা শুরু করেন। আপনি দেখবেন আপনার কোম্পানি প্রাণ কেন প্রাণ-এর থেকে আরও ভালোভাবে এগিয়ে যেতে শুরু করবে।

আরও পড়ুন>>> কঠিন সময়ে একযোগে কাজ করতে হবে: আহসান খান চৌধুরী

Advertisement

তিনি বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা দেশে উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক বেশি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে তাদেরকে (ব্যবসায়ীদের) এমন কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যেগুলোর সমাধানের এখতিয়ার তাদের হাতে নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেই কোর্স কারিকুলামে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংযোজনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে মুখ্যভূমিকা পালন করতে হবে। প্রাণ- আরএফএল গ্রুপ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে পন্য রপ্তানি করছে। এ গ্রুপের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে এক লাখ ৪৫ হাজার এবং পরোক্ষভাবে ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

তার পিতা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরীর উদ্যোক্তা হওয়ার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে আহসান খান চৌধুরী বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তারা কাজের জন্য নতুন পদ তৈরি করছেন। কিন্তু সেটি পূরণের জন্য উপযুক্ত ও দক্ষ লোকবল না পেয়ে তাদেরকে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশ থেকেও লোকজন নিয়ে আসছেন। এতে করে পণ্য ও সেবার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী তথা মানসম্মত স্নাতক তৈরির উদ্যোগ খুবই সীমিত।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রশংসা করে তিনি বলেন, তাদের ন্যায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন তা পারছে না, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উচিত তা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

আরও পড়ুন>>> সর্বাধিক ছয়টি রপ্তানি পদক পেল প্রাণ-আরএফএল

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, গভীরভাবে পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মহিদুল হক মজুমদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, অধ্যাপক ড. মো. মাসুম ইকবাল প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আবু তাহের খান।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির উদ্যাগে শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন বক্তৃতা শুরু হয় ২০১৬ সালে। সেই থেকে প্রথম পর্বের আওতায় মোট ১৩ জন দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের বক্তব্য রাখেন। আজ হলো এই আয়োজনের ১৫তম পর্ব।

এমএইচএম/কেএসআর/জেআইএম