বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন ও সফলতার হারে পিছিয়ে রয়েছেন নারীরা। আবেদনকারীদের সংখ্যায় বরাবরই পুরুষরা এগিয়ে থাকছেন। পাসের হারেও পড়ছে তার প্রভাব। গত পাঁচটি বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল পর্যালোচনা করে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
Advertisement
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সূত্রে দেখা গেছে, ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষায় মোট ২ লাখ ১১ হাজার ২৮২ জন আবেদন করেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪১ হাজার ২৭০ জন হলেও নারী মাত্র ৭০ হাজার ১২ জন। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে মোট ২ হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাাডারে সুপারিশ করা হয়। তার মধ্যে ১ হাজার ৭১৪ জন পুরুষ আর ৬০৯ জন ছিলেন নারী। পুরুষের পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ আর নারীদের ২৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
৩৭তম বিসিএসে এসে দেখা যায়, ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪১৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫৩ জন পুরুষ আর ৮৪ হাজার ৭২৬ জন নারী প্রার্থী ছিলেন। চূড়ান্ত ফলে ১ হাজার ৩১৩ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। তাদের মধ্যে ৯৯০ জন পুরুষ আর ৩২৩ জন নারী। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৪০ শতাংশ আর নারী ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার সময় এ সপ্তাহেই জানা যেতে পারে
Advertisement
৩৮তম বিসিএসে আবেদনকারী ছিলেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪০ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ পুরুষ আর ৩৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ নারী প্রার্থী। চূড়ান্তভাবে ২ হাজার ২০৪ জন পাস করা প্রার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৬১১ জন পুরুষ আর ৫৯৩ জন নারী।
এদিকে চিকিৎসক নিয়োগে ৩৯ ও ৪২তম বিশেষ বিসিএস আয়োজন করে পিএসসি। এ পরীক্ষায় নারী আবেদনকারী বেশি হলেও পাসের হারে নারীরা পিছিয়ে পড়েন। দেখা গেছে, ৩৯তম বিসিএসে ৩৭ হাজার ৫৭৬ জন আবেদনকারীর মধ্যে পুরুষ ৪৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ আর নারী ৫৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চূড়ান্তভাবে ৬ হাজার ৭৯২ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। সেখানে নারীর সংখ্যা ৩ হাজার ১৯২ ও পুরুষ ৩ হাজার ৬০০ জন।
৪২তম বিশেষ বিসিএসে ৪১ হাজার ২৬ আবেদনের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৯২ শতাংশ নারী ও ৪৪ দশমিক ০৮ পুরুষ আবেদন করেন। নিয়োগ পান ৪ হাজার জন। এতে ২ হাজার ৩৯ জন পুরুষ (৫০ দশমিক ৯৮ শতাংশ) আর ১৯৬১ নারী (৪৯ দশমিক ০২ শতাংশ) ছিলেন।
বিসিএস পরীক্ষায় ১০ শতাংশ নারী কোটা অনুসরণ করা হয়।
Advertisement
জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান জাগো নিউজকে বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় পুরুষের চাইতে নারীর অংশগ্রহণ কম, পাসের হারও তুলনামূলক কম। এ পরীক্ষায় ১০ শতাংশ নারী কোটা অনুসরণ করা হলেও নারীরা পিছিয়ে রয়েছেন। বাল্যবিবাহ, পরিবারের প্রতিবন্ধকতাসহ নানান প্রতিবন্ধকতায় অনেক ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুন: বিসিএস মৎস্য ক্যাডারে সাঈদার প্রথম হওয়ার গল্প
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক খাতে নারীরা পুরুষকে পিছে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। বোর্ড পরীক্ষাতেও বরাবর মেয়েরা ভালো ফলাফল করছে। অনেক স্থানে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নারী-পুরুষ উভয়ের সমন্বয়ে ও তাদের অবদানে দেশ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এমএইচএম/এমএইচআর