রাজধানীর গুলিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটা ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা। তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে আমাদের জানিয়েছে, ওই ভবনে গ্যাসের লাইনের ছিদ্র থেকে গ্যাস জমেছিল। সেটা থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।’
Advertisement
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাত ৮টায় গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ পরিদর্শনে যান রাজউক চেয়ারম্যান। পরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ‘ক্যাফে কুইন’ নামে সাততলা ভবনের নিচতলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় পাশাপাশি থাকা দুটি ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ১৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৮৫ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
Advertisement
আরও পড়ুন: হঠাৎ বিকট শব্দ, এরপর চিল্লাচিল্লি-রক্তমাখা মানুষের দৌড়াদৌড়ি
সরেজমিন দেখে গেছে, সাততলা যে ভবনে (ক্যাফে কুইন) বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার পাশে ‘চায়না পয়েন্ট’ নামে আরেকটি পাঁচতলা ভবন রয়েছে। এ ভবনে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা রয়েছে। বিস্ফোরণে পাঁচতলা এ ভবনের সব ফ্লোরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে ভবনের জানালার কাচ।
বিস্ফোরণের ভয়াবহতা আঁচ করা যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা দেখেও। সব ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে। রাস্তায় চলাচল করা যাত্রাবাহী বাসও বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। আহত হয়েছেন বাসে বসে থাকা যাত্রীরাও।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যাফে কুইন ভবনে বেশিরভাগই স্যানিটারি ওয়্যারের দোকান। ভবনের পাশে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবন। ক্যাফে কুইন ভবনের বিস্ফোরণে ব্র্যাক ব্যাংক ভবনসহ আশপাশের স্থাপনারও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: আরও চার মরদেহ উদ্ধার, নিহত বেড়ে ১৫
স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. সম্রাট বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনতে পাই। শব্দ পাওয়ার সঙ্গে মানুষকে ছোটাছুটি করতে দেখি। অনেক মানুষকে ক্যাফে কুইন ভবনের সামনে পড়ে থাকতে দেখি। তারা সঙ্গে সঙ্গে মারা যান।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাফে কুইন ভবনের নিচতলার শাটার দরজা ভেঙে অনেক দূর চলে যায়। এখানে স্যানিটারির দোকান বেশি। এসময় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ভবনের পাশে পানের দোকান, কুরিয়ার সার্ভিস আছে, সেগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।’
এদিকে, বিস্ফোরণের পর সেখানে উদ্ধারকাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। বিস্ফোরণ ঘটা ভবনের সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। কিছুক্ষণ পরপরই ভবন থেকে মরদেহ বের করে আনছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আরএসএম/এএএইচ/এএসএম