তুরস্কে চলতি শতাব্দীর ভয়াবহতম ভূমিকম্পের তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে একটি কুকুরকে। গত বুধবার (১ মার্চ) দেশটির হাতায় প্রদেশের আন্তাকিয়া জেলায় একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে তাকে বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা। খবর এএফপির।
Advertisement
বার্তা সংস্থা ডিএইচএ’র একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধারকারীরা দুটি বড় কংক্রিট স্ল্যাবের মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন এবং আটকেপড়া কুকুরটিকে ডাকছেন।
জানা যায়, কুকুরটির নাম অ্যালেকস। ভিডিওতে এক উদ্ধারকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যালেকস, এদিকে এসো।’ একটু পরে শোনা যায়, ‘দারুণ করেছো, বেটা!’
আরও পড়ুন>> উদ্ধারকারীর পিছু ছাড়ছে না বিড়ালটি
Advertisement
পরের ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা কুকুরটিকে আলিঙ্গন করছেন। তাকে পানি দেওয়া হচ্ছে। এসময় কুকুরটিকে বেশ সতর্ক এবং সুস্থ বলেই মনে হচ্ছিল।
Hatay'ın Antakya ilçesinde depremden 23 gün sonra enkazdan 'Aleks' adlı bir köpek canlı çıkarıldı
— Demirören Haber Ajansı (@dhainternet) March 1, 2023কুকুরটিকে উদ্ধারের পর হায়তাপ নামে একটি প্রাণী সুরক্ষা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের কাছে জীবিত প্রত্যেক প্রাণীই গুরুত্বপূর্ণ, তা সে মানুষ হোক বা পশু।
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকর্মীরা মানুষের পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপে আটকেপড়া শত শত পশু-পাখি উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কুকুর, খরগোশ, গরু ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে মানুষ ও অন্য প্রাণী উদ্ধারের অবিশ্বাস্য সব দৃশ্য।
Advertisement
আরও পড়ুন>> তুরস্ক-সিরিয়ায় ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ৩
সম্প্রতি তুরস্কের মারদিন শহরে ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি বিড়ালকে উদ্ধার করেছিলেন স্থানীয় এক দমকলকর্মী। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এরপর থেকে ওই ব্যক্তির পিছু ছাড়ছে না বিড়ালটি। এই ঘটনা এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প। এর কয়েক ঘণ্টা পরে ফের ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয় ওই অঞ্চলে। এতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় তুরস্কের দক্ষিণ এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।
আরও পড়ুন>> ‘ভূমিকম্প, ভূমিকম্প’ খেলে ভয় কাটাচ্ছে শিশুরা
এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।
তুর্কি কর্তৃপক্ষের হিসাবে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ২১৮ জনে। আর সিরিয়ার সরকার ও উদ্ধারকারী সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫ হাজার ৯১৪ জন।
সূত্র: এনডিটিভি, আল-জাজিরাকেএএ/