দেশজুড়ে

মা কিডনি দিতে প্রস্তুত থাকলেও তানভীরের চিকিৎসায় বাধা টাকা

মাত্র ১৬ বছর বয়সেই দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে বিছানায় পড়ে আছে রাজবাড়ী মাটিপাড়ার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর খন্দকার। ছেলেটির যখন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, হৈ-হুল্লোড় করে বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, তখন নিয়তির নির্মম পরিহাসে সে পড়ে আছে বিছানায়। অর্থাভাবে মা-বাবার সামনে দিন দিন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে এই মেধাবী শিক্ষার্থী।

Advertisement

রাজধানীর শ্যামলীর সিকেডি ইউরোলজি হাসপাতালে তানভীরের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর চিকিৎসকরা বলেছেন দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে। এ অবস্থায় ছেলেকে বাঁচাতে তানভীরের মা ফাতেমা কিডনি দিতে প্রস্তুত থাকলেও বাধ সাধছে টাকা। পরীক্ষা-নীরিক্ষা, অপারেশন, ওষুধসহ প্রয়োজন প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। কিন্তু তানভীরের পরিবারের পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। ফলে তানভীরকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছে পরিবারটি।

তানভীর রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বারলাহুরিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। সে বেথুলিয়া বারলাহুরিয়া সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে তানভীর।

তানভীরের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে তানভীরকে আপনারা বাঁচান। ওর কিডনি প্রতিস্থাপনে সব মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এতো টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য আমার নেই। দোকানে দোকানে বিভিন্ন পণ্যের অর্ডার নিয়ে মালামাল সরবরাহ করে সংসার চালাই। নিজের বলতে বাড়ির জমিটুকু ছাড়া আর কিছু নেই। তানভীর অসুস্থ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ওর চিকিৎসায় প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন আর পারছি না। আর তানভীরকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে আমার কাজটাও আর করতে পারছি না। আমার ছেলেকে বাঁচাতে সহযোগিতা করুন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, তানভীর অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। নির্বাচনী পরীক্ষায় সে প্রথম হয়েছে। আমার তিন সন্তানের মধ্যে বড় তানভীর। হঠাৎ কয়েকমাস আগে তানভীর অসুস্থ হয়ে তার শরীর ফুলে যায়। পরে রাজবাড়ীর একটি হাসপাতালে পরীক্ষা-নীরিক্ষায় তার কিডনি রোগ ধরা পড়ে। সেখান থেকে ফরিদপুরে নিয়ে গেলেও একই রিপোর্ট আসে।

পরে সেখানে ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু হঠাৎ তানভীরের অবস্থা আরও খারাপ হলে চিকিৎসকরা ঢাকায় পাঠান। তার দুইটি কিডনিই নষ্ট। এমন অবস্থায় সে এখন শ্যামলীর সিকেডি ইউরোলোজি হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসকরা বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব তানভীরের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমার স্ত্রী কিডনি দিতে রাজি হলেও টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারছি না।

বেথুলিয়া বারলাহুরিয়া সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মান্নান জানান, তানভীর অত্যন্ত মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা তার। কিন্তু সে অসুস্থ। মাদরাসার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থান থেকে সহোগিতার চেষ্টা করছেন। সবাই যদি তানভীরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে তাহলে তানভীরের কিডনি দ্রুত প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে।

এফএ/জেআইএম

Advertisement