অনেকে বলে থাকেন, খাবার খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে বিলাসিতা করতেন না। তিনি কখনো এমনও হতো যে, শুধু পানি ও খেজুর দিয়ে খাবার সেরেছেন। তবে খাওয়ার পরে কেউ চাইলে- এমনিতেই মিষ্টি-জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে পারে। খাবার খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নাত- এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ, এই ধরনের কোনো বর্ণনা হাদিসে নেই।
Advertisement
তবে মিষ্টি জাতীয় খাবার হজমের অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়; যা ঝাল খাবারে একটু বেশি নিঃসৃত হয়। ফলে খাওয়া-দাওয়ার পর মিষ্টি জাতীয় কিছু খেলে নানান রকম উপকার হয়ে থাকে। যেমন- খাবারের পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হতে পারে। কিন্তু খাবারের পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নত; এ বিষয়টি ঠিক নয়।
যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিনের পর দিন পেটভরে খানা জুটতো না। মাসের পর মাস বাড়িতে চুলাই জ্বলত না। তখন খেজুরই হতো একমাত্র সম্বল; আর খেজুর মিষ্টিই হয়। সেই হিসেবে অনেকে হয়তো খানার পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নত বলে থাকেন। কিন্তু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাবার খাওয়ার পর মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য খেয়েছেন মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায় না। বরং খেজুর দিয়ে খানা সেরেছেন মর্মে বর্ণনা এসেছে। অতএব, খানার শেষে মিষ্টি ভক্ষণ করাকে সুন্নত বলা ঠিক নয়।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমাদের উপর দিয়ে মাস কেটে যেত, আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার) আগুন জ্বালাতাম না। আমরা কেবল খুরমা ও পানির উপর চলতাম। তবে যৎসামান্য গোশত আমাদের কাছে এসে যেত। (বুখারি ৬৪৫৮)
Advertisement
এমনিতে শুধু মিষ্টি খাওয়া কি সুন্নত?হ্যাঁ, এমনিতে শুধু মিষ্টি খাওয়া নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাসগত সুন্নত। তিনি মিষ্টি পছন্দ করতেন। এটি ইবাদতের সুন্নত বা আবশ্যক পালনীয় নয়। এটিকে সুন্নতে আদিয়া বলা হয়, অর্থাৎ স্বভাবজাত সুন্নত।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হালওয়া (মিষ্টান্ন দ্রব্য) ও মধু ভালোবাসতেন।’ (বুখারি ৫৪৩১)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা করতে পছন্দ করতেন, তা যদি কেউ ভালোবেসে করে থাকেন; তাহলে তিনি সেই কাজের জন্য সাওয়াব অর্জন করতে পারবেন। তবে তা অবশ্যম্ভাবী সুন্নতের ইবাদত নয়।
এমএমএস/জিকেএস
Advertisement