ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থায় নাজুক পরিস্থিতি ও বিশৃঙ্খলতার পেছনে স্বার্থান্বেষী মহল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
Advertisement
তিনি জানান, এই স্বার্থান্বেষী মহল গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক তা চাইবে না।
তবে সব বাধা উপেক্ষা করেই গণপরিবহনকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ডিএসসিসি মেয়র।
আরও পড়ুন: বেপরোয়াই থেকে গেল গণপরিবহন
Advertisement
বুধবার (১ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এদিন মেয়র ‘খিলগাঁও সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র’র নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, গণপরিবহন ব্যবস্থার যে নাজুক এবং বিশৃঙ্খল অবস্থা, এর পেছনে অনেক চক্র এবং স্বার্থান্বেষী মহল রয়েছে। তারা অবশ্যই চাইবে না যে, এটা একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আসুক। কিন্তু আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছি। আজক আমরা মালিক-শ্রমিক সমিতি এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে একটি সভা করবো। যেখানে উত্তরের মেয়রও থাকবেন। আমরা আশাবাদী, যত রকমের বাধা আসুক না কেন, ইনশাআল্লাহ আমরা ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হবো।
আরও পড়ুন: গণপরিবহন নিয়ে জনভোগান্তি, নৈরাজ্যই কি নিয়তি
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমরা বলেছি, যত্রতত্র কাউন্টার এবং সেই কাউন্টার ঘিরে রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে দেওয়া, যানজট সৃষ্টি করা, এগুলো আর হতে দেওয়া হবে না। এজন্য যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন ছিল, এরমধ্যে আমরা সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করেছি এবং সেটার পরিসর বৃদ্ধি করেছি।
Advertisement
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাজ চলতি মাসের মধ্যেই শেষ করা হবে বলে জানান মেয়র তাপস।
তিনি বলেন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল আধুনিক হওয়ার পর, বাইরে যত্রতত্র কাউন্টারের আর প্রয়োজন হবে না। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই যেন সব বাস কাউন্টার টার্মিনালের ভেতর চলে আসে সেই ব্যবস্থা করেছি। পর্যাপ্ত কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছি এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বাসগুলো সড়কে না রেখে তারা টার্মিনাল ব্যবহার করবে। টার্মিনালের ভেতর ডিপোর ব্যবস্থা করেছি। গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেছি। সেটা তারা ব্যবহার করবে। তাহলে ঢাকা শহরে একটি শৃঙ্খলা আসবে আর যানজট থাকবে না। আমরা চাই ঢাকাবাসীকে যানজটমুক্ত একটি ‘সচল ঢাকা উপহার’ দিতে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহন চালুর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
ঢাকা নগর পরিবহন এখন বাস্তবতা এবং ক্রমান্বয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে বাস রোড রেশনালাইজেশন কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির আওতায় ঢাকা নগর পরিবহন সফলতার সঙ্গে চালু করেছি। বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার যাত্রীকে ঢাকা নগর পরিবহন সেবা দিচ্ছে। আমরা আরও তিনটি যাত্রাপথ চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। সুতরাং নগর পরিবহন এখন বাস্তবতা এবং সফলতার দিকে এগিয়ে চলছে।
এরপর মেয়র নৌপথে মান্ডা খাল পরিদর্শন, বঙ্গবাজার এলাকায় আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুল আলম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ফারজানা ইসলাম ডলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএমএ/জেডএইচ/এএসএম