আন্তর্জাতিক

৭০০ স্কুলছাত্রীকে বিষপ্রয়োগের অভিযোগ, তদন্ত করছে তেহরান

ইরানের কোম শহরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে ৭০০ ছাত্রীকে বিষপ্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। গত নভেম্বর থেকে এ ঘটনা ঘটে। বিষক্রিয়ায় কোনো শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়নি। তবে তাদের অনেকেই শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা ও ক্লান্তিতে ভুগছে। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে তেহরানের প্রশাসন। ঘটনাটির তদন্ত করছে তারা।

Advertisement

এর আগে রোববার দেশটির উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের শিক্ষা বন্ধের উদ্দেশ্যে কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে, পরে তিনি বলেন, তার বক্তব্যকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়।

আরও পড়ুন> মাহসা আমিনির মৃত্যু: প্রতিবাদের ঢেউ কীভাবে সামলাবে ইরান?

দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেল গত সপ্তাহে ঘোষণা করেন, তিনি একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করছেন। তবে, তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, এটি একটি ‘অপরাধমূলক এবং পূর্বপরিকল্পিত’ ঘটনা।

Advertisement

প্রথম বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটে গত ৩০ নভেম্বর। ধর্মীয় শহর কোমের নুর টেকনিক্যাল স্কুলের ১৮ শিক্ষার্থীকে সে সময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ওই প্রদেশজুড়ে আরও ১০ স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় লোরেস্তান প্রদেশের বোরুজার্দ শহরের চারটি স্কুলে গত সপ্তাহে অন্তত ১৯৪ জন মেয়েকে বিষপ্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার রাজধানী তেহরানের কাছে পারদিসের খৈয়াম গার্লস স্কুলে আরও ৩৭ জন ছাত্রীকে বিষপ্রয়োগ করার ঘটনা ঘটে। এভাবে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৭০০-র মতো শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন> হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভে নিহত ২০০, স্বীকার করলো ইরান

ওই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হওয়ার আগে ট্যানজারিন বা পঁচা মাছের গন্ধের কথা জানিয়েছে।

তবে এ ধরনের ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা। প্রতিবাদে কোম শহরে একশ জনের মতো মানুষ বিক্ষোভও করেন। অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন বলেন, তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে বিরত রাখার জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

Advertisement

ইরানের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউনেস পানাহি বলেছেন, বিষপ্রয়োগের বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। পানাহির বরাতদিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, কোমের স্কুলগুলোর বেশ কিছু শিক্ষার্থী বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর দেখা গেছে, কিছু লোক চেয়েছিল সব স্কুল, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাক।

আরও পড়ুন> ইরানে বিক্ষোভে নিহত ৭৬, কলকাঠি নাড়ছে ‘পশ্চিমারা’

ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ জনের। তবে সেই থেকে থেমে থেমে আন্দোলন চলছে। যদিও আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রশাসন বলছে, পশ্চিমা দেশগুলো উসকানি দেয় এসব আন্দোলন-বিক্ষোভে।

সূত্র: বিবিসি

এসএনআর/জেআইএম