বাজারে নামে-বেনামে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির লবণে বিন্দুমাত্রও আয়োডিন নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
Advertisement
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের মাধ্যমে রাজধানীর মিরপুরের শাহ-আলী মার্কেটের বিভিন্ন দোকান থেকে সংগ্রহ করা লবণ পরীক্ষা করে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিসিকের কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুরের পাইকারি বাজারে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। এসময় বাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পানির সাতটি ব্র্যান্ডের লবণ সংগ্রহ করে আয়োডিন পরীক্ষা করা হয়।
আরও পড়ুন: লবণে আয়োডিন না থাকলে জেল-জরিমানা
Advertisement
লবণের আয়োডিনের যথাযথ মাত্রা হওয়া উচিত ১৫ থেকে ৫০ পিপিএম। এক্ষেত্রে বিসিকের ল্যাবে পরীক্ষায় বেশিরভাগ কোম্পানির লবণে পর্যাপ্ত আয়োডিন পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড রোগ হয়। এতে থাইরয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে গলা ফুলে যায়। বিকলাঙ্গতাও দেখা দিতে পারে। আয়োডিনের অভাবে গর্ভবতীদের গর্ভস্রাবেরও ঝুঁকি বাড়ে।
১৯৮৯ সালে আয়োডিন স্বল্পতায় রোগ নিবারণ আইন পাস করার এবং ১৯৯৩ সালে এক সমীক্ষায় বাংলাদেশে ৪৭ দশমিক এক শতাংশ মানুষের গলগণ্ড রোগ থাকার কথা ধরা পড়ার পর ১৯৯৪ সালে আয়োডিনহীন লবণ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।
অভিযানে বাজারের বিভিন্ন পাইকারি দোকান থেকে নামে-বেনামে সাতটি ব্র্যান্ডের লবণ পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে- ডলফিন, এসিআই, ফ্রেশ, শাহীন মোল্লা, হিমু সল্ট, নিউ জোড়া ডলফিন ও নিউ কোয়ালিটি সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ।
Advertisement
আরও পড়ুন: নিবন্ধন ছাড়া লবণ আমদানি করলে জেল-জরিমানা
পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায়, এসব লবণের মধ্যে নিউ কোয়ালিটি সল্টে ৪ দশমিক ২৫ পিপিএম আয়োডিন এবং নিউ জোড়া ডলফিন, শাহীন মোল্লা, হিমু সল্টে কোনো প্রকার আয়োডিন পাওয়া যায়নি। এছাড়া এসিআই এবং ফ্রেশ লবণে যথাযথ মাত্রায় আয়োডিন পাওয়া যায়।
এদিকে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের তন্ময় এন্টারপ্রাইজসহ বেশ কয়েকটি পাইকারি দোকানের আয়োডিনহীন লবণ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে এসব লবণ ধ্বংস করা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব লবণ বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থার কথা জানায় ভোক্তা অধিদপ্তর।
অভিযানের বিষয়ে অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, মিরপুরের এই বাজারে আমরা সাতটি ব্র্যান্ডের লবণ বিসিকের স্পেশালিস্টদের সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষা করেছি। এরমধ্যে চারটি ব্র্যান্ডের লবণে কোনো প্রকার আয়োডিন নেই। এসব কোম্পানি লবণের মোড়কে আয়োডিন আছে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আয়োডিন নেই এমন লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় আয়োডিনের ঘাটতি হলে শিশুর যা হয়
তিনি বলেন, আয়োডিন নেই এমন লবণ জব্দ করে জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়। এসব লবণ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে তলব করা হবে। পরবর্তীকালে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনএইচ/এমকেআর/এএসএম