কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে কক্ষে আটকে রেখে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় দুটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির, অন্যটি করেছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কমিটি।
Advertisement
আদালতে প্রতিবেদন দুটি উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। দুটি প্রতিবেদনেই ওই ছাত্রীকে পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন>>> ইবিতে নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ছাত্রলীগ নেত্রীর
পাশাপাশি হল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও প্রক্টরের উদাসীনতার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। এরপর আদালত রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংগ্রহ করতে বলেন।
Advertisement
পাশাপাশি ইবির কোনো আইনজীবী থাকলে তাকে খবর দিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছেন। আর আদেশের জন্য বুধবার দিন রেখেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন>>> ফুলপরীকে নির্যাতন করা হয়েছে: বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদন
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। আর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
Advertisement
এর আগে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনভর পর্যালোচনায় বসেন তারা।
গত ১২ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।
আরও পড়ুন>>> ইবি ছাত্রীকে নির্যাতন: বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে
এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। হাইকোর্ট প্রশাসন ক্যাডার, বিচার বিভাগ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরে সমন্বয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ সময় দুই অভিযুক্তকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়। সে অনুসারে প্রতিবেদনগুলো দেওয়া হয়।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম