সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছে দেশের নানা প্রান্তের শিশু সংসদ সদস্যরা।
Advertisement
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত চাইল্ড পার্লামেন্টের ২২তম অধিবেশনে এই দাবি পেশ করে চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্যরা।
এতে অংশ নেয় ১৬টি বিশেষ অঞ্চলের ২২ জন মেয়ে ও ২১ জন ছেলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
আরও পড়ুন: সুবিধাবঞ্চিত শিশু জেসমিনের ভাগ্য বদলের গল্প
Advertisement
বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছর বিশেষ অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় শিশুদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ বাজেট বরাদ্দকরণ এবং এই অঞ্চলের শিশুদের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রতিমন্ত্রীর কাছে চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্যরা সুপারিশ করে।
তারা বলে, বিগত চাইল্ড পার্লামেন্টে শিশুদের উত্থাপিত বিষয়সমূহের ওপর বর্তমান সরকার অসংখ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন, বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালু, শিশু আইন ২০১৩ বাস্তবায়নে জেলা-উপজেলা শিশুকল্যাণ বোর্ড গঠন, বাল্যবিয়ে রোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০) প্রণয়ন ও জেলা পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য হেল্পলাইন প্রতিষ্ঠা, ষষ্ঠ হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি শিক্ষা প্রদান, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বপ্ন এখন ‘সুইচ’
অনুষ্ঠানে শিশুরা প্রান্তিক অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য স্কুলগুলোতে ডিজিটাল ল্যাব ও আইসিটির জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দের দাবি জানায়। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত স্কুল এবং শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় তারা।
Advertisement
বিষয়ভিত্তিক দক্ষ শিক্ষকের সঙ্গে প্রান্তিক অঞ্চলে বাংলা ভাষাসহ তাদের নিজস্ব ভাষায় দক্ষ এমন শিক্ষক নিয়োগের দাবি করে শিশুরা। শিশু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের জন্য বাজেট ও মানবসম্পদ বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে তারা মত প্রকাশ করে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের অপারেশন্স অ্যান্ড সিস্টেম ডিরেক্টর এ এফ এম মইন বলেন, আধুনিক সময়ে নিজেদের ডিজিটাল যুগের সময়োপযোগী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি একদিকে যেমন সমাজে বৈষম্য প্রতিরোধে কাজ করবে তেমনি তৈরি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।
আরও পড়ুন: ‘ফাতেমা’ নাম পেল সেই নবজাতক, ঠাঁই হচ্ছে শিশু নিবাসে
অধিবেশন শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শিশুদের আইসিটি ও ডিজিটাল শিক্ষার পাশাপাশি ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার ও অনলাইন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলেন। প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলধারায় যুক্ত করতে তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্থানীয় শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের সহজবোধগম্যতা নিশ্চিতকরণে ভাষাগত জটিলতা কমিয়ে আনা সম্ভব।
‘চাইল্ড পার্লামেন্ট’ বাংলাদেশে শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি শিশু সংগঠন। যা শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় ২০০৩ সাল থেকে সারাদেশে কাজ করে আসছে। এ পর্যন্ত মোট ২২টি চাইল্ড পার্লামেন্ট অধিবেশন হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, অপরাজেয়-বাংলাদেশ, ইয়েস বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্ক ফোর্স বাংলাদেশ এই চাইল্ড পার্লামেন্ট অধিবেশন আয়োজনে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে।
আইএইচআর/জেডএইচ/