আবারও ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো তুরস্ক। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে দেশটির নিগদে প্রদেশের বোর জেলায় এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
Advertisement
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর জানায়, বোর জেলা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুর্কি-সিরীয় সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। নতুন এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭ কিলোমিটার গভীরে।
আরও পড়ুন>> ‘আল্লাহ, মৃত্যু দাও না হয় বাড়ি ফেরাও’
এক টুইটে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বলেন, এখন পর্যন্ত নতুন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকারী দল ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করতে মাঠে রয়েছে। আল্লাহ আমাদের দেশ ও আমাদের জাতিকে সব ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন।
Advertisement
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সাত দশমিক আট ও সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্পের পর থেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্ব ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত নয় হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে।
তুরস্কের ১টি ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত প্রদেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে প্রবেশ করা কঠিন ছিল। তাছাড়া, তবে গত কয়েকদিনে তুরস্ক-সিরিয়া কোনো দেশ থেকেই কাউকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন>> ‘ভূমিকম্প, ভূমিকম্প’ খেলে ভয় কাটাচ্ছে শিশুরা
জানা গেছে, কেবল তুরস্কের দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে। তুর্কি সরকার বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ১ লাখ ৭৩ হাজার ভবন ধসে পড়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোতে বসবাসকারী ১৯ লাখের বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল এবং সরকারি বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে।
Advertisement
জোড়া ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জাতিসংঘের ধারণা, সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা অন্তত ৮৮ লাখ। অবশ্য বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সম্মুখীন দেশটি থেকে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন>> ধ্বংসস্তূপের নিচে দিনের পর দিন মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকে?
ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেই তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে অথবা তাঁবু, কন্টেইনার হোম ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতার আবাসস্থলে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের ঘরবাড়ি এক বছরের মধ্যেই পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত গতির চেয়ে সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার দেওয়া। কারণ, ২০ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ফের জোড়া ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে টিকে থাকা আরও কয়েকটি ভবন।
আরও পড়ুন>> ১১তম দিনে উদ্ধার ১২ বছরের শিশু
সেদিন আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরও একটি ভূকম্পন। এ ঘটনায় তুরস্কে অন্তত ছয়জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
এসএএইচ