দেশজুড়ে

বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রীর মা

পটুয়াখালীতে বিয়ের দাবিতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক নারী (২৫)। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৌকরন ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের প্রধান শিক্ষক মো. রশিদ মাস্টারের বাড়িতে অনশনে বসেন তিনি।

Advertisement

ওই নারীর দাবি, পূর্ব কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রশিদ মাস্টারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ওই নারীর দীর্ঘ ৬ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে। ওই নারীর আগের ঘরের সন্তান প্রধান শিক্ষকের স্কুলের শিক্ষার্থী হওয়ার সুবাদে তাদের পরিচয় হয়।

প্রতিবেশী রানী বেগম বলেন, সকালে আমরা শুনতে পাই এক নারী আসছে বিয়ে করার জন্য। তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি তিনি পটুয়াখালী থেকে এসেছেন। আগে কখনো তাকে দেখিনি।

অনশনরত নারী বলেন, ছয় বছর ধরে সে (প্রধান শিক্ষক) আমাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাসায় রেখেছে। আমার মেয়ে তার স্কুলে পড়তো। সেখান থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সে এতদিন সম্পর্ক করেছে। সে আমাকে অনেক ছলনা করে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছে কিন্তু সেই বিয়ের কাগজ এখন পর্যন্ত দেয়নি। সে শুধু কলমা পড়েছে, কাবিন করেনি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, তার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে আমার বাবা-মা কেউ আমাকে প্রশ্রয় দেয় না। আজ আমি অসহায় হয়ে তার বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। আমার একটা মেয়ে আছে। তাকেও তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে আমার গর্ভের একটি বাচ্চাও নষ্ট করেছে। সে বলেছে, আমাকে কোনোদিন ছেড়ে যাবে না এবং সে কোরআন শরিফ ছুঁয়ে কসম খেয়েছে।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী বলেন, ২০ বছর ধরে আমার স্বামীর সংসার করছি, এরকম কোনো কিছু আমি আগে কখনো দেখিনি। আজ সকালে হঠাৎ করে এই নারী আমার ঘরে উঠে আমার স্বামীকে বলছে বিয়ে করতে। এটা আসলে ষড়যন্ত্র। আমার ছেলে রাজনীতি করে, এজন্য আমাদের প্রতিপক্ষ একটি দল ষড়যন্ত্র করে এই নারীকে এখানে পাঠিয়েছে।

প্রধান শিক্ষক রশিদ মাস্টার বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের আমি চিহ্নিত করতে পেরেছি। স্থানীয় মেম্বারদের আমি অবহিত করেছি। তারা যদি এটার সমাধান না করতে পারেন তাহলে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এর আগেও ওই নারী আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছিল। সেই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। কারণ মামলায় যে ছবি ও ডকুমেন্ট দেখিয়েছে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

আপনি বাড়ি থেকে চলে গেছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ফজরের নামাজের পর বাইরে চলে যাই। এরপর একটি স্কুলে প্রোগ্রাম ছিল সেই প্রোগ্রামে গিয়েছি। এখন আমি মেম্বারের বাড়িতে আছি।

Advertisement

মৌকরন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুল মেম্বার বলেন, সকালে আমি ওই খবর শুনে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে যাই। এ সময় ওই নারীকে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান শিক্ষক তাকে বিয়ে করেছেন। তবে কাবিননামা তিনি দেখাতে পারেননি। এমনকি তার আগের স্বামীকে তালাক দেওয়ার কোনো কাগজও তিনি দেখাতে পারেননি।

আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/এমএস