ফিচার

জর্জ হ্যারিসনের জন্ম

জর্জ হ্যারিসন বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট। তবে তার প্রতিভা কেবলমাত্র এ দু’য়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তার বিচরণের ক্ষেত্র ব্যাপ্ত ছিল সঙ্গীত পরিচালনা, রেকর্ড প্রযোজনা এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনা পর্যন্ত। বিখ্যাত ব্যান্ড সংগীত দল দ্য বিটলসের চার সদস্যের একজন হিসেবেই তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন।

Advertisement

পপ সংগীতের জনপ্রিয় ইংল্যান্ডের এই শিল্পী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পণ্ডিত রবি শংকরের অনুরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ১৯৭১ সালের ১ আগস্টে এক বেনিফিট সংগীত অনুষ্ঠানের কনসার্ট ফর বাংলাদেশ আয়োজন করেছিলেন। এই কনসার্ট হতে সংগৃহীত ২ লাখ ৫০ ডলার বাংলাদেশের উদ্বাস্তুদের জন্য দেওয়া হয়েছিল।

মূলত লীড গিটারিস্ট হলেও বিটলসের প্রতিটি অ্যালবামেই জর্জ হ্যারিসনের নিজের লেখা ও সুর দেওয়া দু’একটি একক গান থাকতো। বিটলস্ এর হয়ে এ সময়ের গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- ইফ আই নিডেড সামওয়ান, ট্যাক্সম্যান, হোয়াইল মাই গীটার জেন্টলী উইপস, হেয়ার কামস দ্য সান এবং সামথিং। বিটলস ভেঙ্গে যাওয়ার পরও তার জনপ্রিয়তা কমেনি। সত্তরের পরবর্তী সময়ে তার অনেক গান প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়েছিল। এ সময় কালের গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- মাই সুইট লর্ড, গিভ মি পিস অন আর্থ, অল দোজ ইয়ার্স এগো, গট মাই মাইন্ড সেট অন ইউ ইত্যাদি।

১৯৬০ এর মাঝামাঝি সময় থেকে হ্যরিসন ভারতীয় সংস্কৃতি প্রতি আকৃষ্ট হন এবং বিটলসের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ১৯৬৬ সালে হ্যরিসন তার স্ত্রী প্যাঁটিকে কে নিয়ে মুম্বাই সফরে যান। সেখানে তিনি বেশ কিছু ধর্গুমরুর সঙ্গে দেখা করেন, সিতার নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং কিছু তীর্থ স্থান পরিদর্শন করেন। ১৯৬৮ সালে উত্তরভারতের হৃষীকেশ পরিদর্শনে যান বিটলসের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এবং সেখানে মহর্ষী মহেশ যোগীর কাছে শিক্ষা নেন।

Advertisement

১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল, তখন জর্জ হ্যারিসন তার বন্ধু রবি শংকর এর পরামর্শে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন প্রাঙ্গনে দুটি দাতব্য সঙ্গীতানুষ্ঠান(কনসার্ট) এর আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানটি তে জর্জ হ্যারিসন, রবি শংকর ছাড়াও গান পরিবেশন করেন বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, অপ্র বিটল রিঙ্গো স্টার সহ আরও অনেকে। কনসার্টে জর্জ হ্যারিসন তার নিজের লেখা বাংলাদেশ গান পরিবেশন করেন। কনসার্টের টিকেট, সিডি ও ডিভিডি হতে প্রাপ্ত অর্থ ইউনিসেফের ফান্ডে জমা করা হয়। ২০০১ সালে ২৯ নভেম্বর হ্যরিসন ৫৮ বছর বয়সে মেটাস্টাটিক নন-স্মল সেল লাং ক্যন্সারে মারা যান জর্জ হ্যারিসন।

কেএসকে/জেআইএম