রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দিনসমূহের মধ্যে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪) তাই ইসলামে জুমাদিন একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। এ দিন আসরের পরে দোয়া কবুল হয়। এটি মুমিন মুসলমানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ। হাদিসে আরও এসেছে-
Advertisement
‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম ৮৫৪)
হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী জুমার দিনের আসরের সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় মুমিনদের জন্য বিশেষ কিছু আমলের কথা এসেছে হাদিসে। আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে- দোয়া, জিকির ও ইস্তেগফার ইত্যাদি। এছাড়াও আরেকটি আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেটি হলো- বিশেষ নিয়মে দরুদ পাঠ
জুমার দিন আসরের পরের বিশেষ আমল
Advertisement
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নে উল্লেখিত দরুদ শরিফ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে।’ (আফদালুস সালাওয়াত ২৬)
দরুদটি হলো-
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيْمَا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা।’
Advertisement
জুমার দিন দোয়া কবুলের প্রমাণ
জুমার দিন একটি সময় রয়েছে যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাদিসে ওই সময়ে দোয়া কবুলের কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টায় যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি ৬৪০০)
হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, জুমার দিন এমন একটি সময় আছে, যেটাতে বান্দা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দিয়ে থাকেন।’ (মুসান্নাফ ৫৫৮৮)
আসরের শেষ সময়েই দোয়া কবুল হয়
হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময়ে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এ মুহূর্তটি তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ ১০৪৮)
আসরের শেষ সময় বলতে সূর্য ডোবার আগ-মুহূর্তে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত সিরাতগ্রন্থে জাদুল মাআদে এসেছে, ‘জুমার দিন আসরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন দরুদের ব্যাপারে বেশি মনোনিবেশ করার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত নিয়মের আসর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সময়ে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম