শ্রীলঙ্কায় একটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করতে চলেছে অর্থনৈতিক ধসের মুখে থাকা ভারতীয় জায়ান্ট আদানি গ্রুপ। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটি দেউলিয়া হওয়ার পর সেখানে এই প্রথম কোনো বড় বিদেশি বিনিয়োগের ঘোষণা এলো। খবর এএফপির।
Advertisement
শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ বোর্ড (বিওআই) বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা দিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে দুটি বায়ুবিদ্যুৎ ফার্ম তৈরি করবে আদানি গ্রুপের অঙ্গসংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৪ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন>> আদানির সঙ্গে চুক্তি সংশোধন চায় বাংলাদেশ, ভারত বললো ‘জড়িত নই’
লঙ্কান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে শ্রীলঙ্কার জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Advertisement
এর আগে, কলম্বোয় ৭০ কোটি ডলারে একটি বন্দর টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পেয়েছিল আদানি গ্রুপ। ওই ঘটনা এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগ মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার বড় পদক্ষেপ ছিল বলে মনে করা হয়। কারণ আদানি গ্রুপকে ভারত সরকারই ঠিকাদার হিসেবে মনোনীত করেছিল।
আরও পড়ুন>> ভারতের পতাকায় শরীর ঢেকে দেশ লুট করছেন আদানি
সংস্থাটি এখন কলম্বো বন্দরে চীন পরিচালিত টার্মিনালের ঠিক পাশেই ১ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২০ মিটার গভীরতার একটি জেটি তৈরি করছে। এটি হবে দুবাই ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে একমাত্র গভীর সমুদ্র কন্টেইনার বন্দর।
শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকেরা বলেছেন, তিনি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চূড়ান্ত করতে গত বুধবার কলম্বোয় আদানি গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই চালু হবে।
Advertisement
সম্প্রতি হিনডেনবার্গ রিসার্চের তোলা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যে টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় বিপুল এই বিনিয়োগের খবর সামনে এলো।
আরও পড়ুন>> আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
গত ২৪ জানুয়ারি এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আদানির বিরুদ্ধে ‘করপোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজি’র অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হিনডেনবার্গ রিসার্চ। তাদের দাবি, আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলো কয়েক দশক ধরে শেয়ারবাজারে ধোঁকাবাজি এবং হিসাবপত্র জালিয়াতি করে আসছে।
হিনডেনবার্গ রিসার্চ আরও দাবি করেছে, আদানির কোম্পানিগুলোর কাঁধে বিশাল ঋণ রয়েছে, যা পুরো গ্রুপটির অর্থনৈতিক ভিত্তিকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
আরও পড়ুন>> লন্ডভন্ড করপোরেট সাম্রাজ্য: আদানি গ্রুপের ভবিষ্যৎ কী?
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গ্রুপ। তাদের দাবি, আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা ভারতের পরিকল্পিত আক্রমণের অংশ।
কেএএ/