লেনদেনের শুরুতে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত সূচকের পতন হয়েছে। একই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের গতি। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমে তিনশ কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। চলতি সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস বুধবারের বাজার চিত্র এমনটিই।
Advertisement
এর আগে সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কারণে শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি। অর্থাৎ চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন দেখতে হলো বিনিয়োগকারীদের।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় চারগুণ প্রতিষ্ঠানের। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি।
আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই
Advertisement
অথচ এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের তিন ঘণ্টাজুড়েই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। তবে প্রথম ১০ মিনিটের লেনদেন শেষ হতেই বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা।
লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের তালিকা বড় হতে থাকে। লেনদেনের শেষ দিকে এই মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে সবকয়টি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২০টির। আর ১৫২টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২২১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: শুরুতে সূচক ঊর্ধ্বমুখী, লেনদেনে ধীরগতি
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। বুধবারের লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে এমনটি নয়, ডিএসইতে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারির পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার। এছাড়াও ৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, জেমিনি সি ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা এবং অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার।
আরও পড়ুন: ৩০০ কোটি টাকার নিচে নামলো লেনদেন
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এমএএস/কেএসআর/এএসএম