দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নে মানিগাঁও গ্রামের ‘জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান’। ৩ হাজার গাছে লাল টুকটুকে শিমুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। পাশাপাশি এই বাগান ঘিরে এর আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় মানুষের।
Advertisement
মানিগাঁও এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন। প্রতিদিন সকালে এসে শিমুল ফুল কুড়িয়ে ভালোবাসার চিহ্ন তৈরি করেন। পরে শিমুল বাগানে আসা দর্শনার্থীরা বা যুগলরা ফুলের মধ্যে বসে ছবি তোলেন। এতে খুশি হয়ে জামালকে কিছু টাকা দিয়ে যান। এভাবেই দিন শেষে ৪ থেকে ৫শ টাকা আয় হয় জামালের। সেই টাকা দিয়েই চলে জামালের সংসার।
আরও পড়ুন- প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসুন শিমুল বাগানে
একইভাবে ঘোড়া দিয়ে পর্যটকদের পুরো শিমুল বাগান ঘুরিয়ে দিনে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা রোজকার করেন মানিক আহমেদ।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে প্রায় ৩ হাজার শিমুল গাছ নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান’। শখের বসেই ২০০৩ সালের দিকে গাছগুলো লাগান ওই এলাকার সৌখিন ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন। এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন যাদুকাটা নদীর তীরে ভিড় জমান হাজার হাজার পর্যটক। বসন্তের বাতাসে শিমুল বাগানে গাছে গাছে থোকায় থোকায় রক্তরাঙা শিমুল ফুল ও পাখ-পাখালির কলকাকলীতে মুখর থাকে পরিবেশ।
আরও পড়ুন- ব্যস্ততা আর ক্লান্তি ভোলার মাধ্যম ‘পুষ্প কানন’
এদিকে এই বাগানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ছোট বড় ৪০টি খাবারের দোকান। প্রতিমাসে এই দোকানগুলো থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিক্রি হয়। এমনকি এই বাগান ঘিরে ওই এলাকায় আয় বেড়েছে অটোরিকশা, সিনএনজি, মোটরসাইকেল চালকদেরও।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ছবি চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, শিমুল বাগানে ঘুরতে এসে স্বপ্নের মতো লাগছে। এত সুন্দর জায়গা আগে কখনো দেখিনি।
Advertisement
সিলেট থেকে আসা পর্যটক আবির চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, অনেক দিনের শখ ছিল শিমুল বাগানটি দেখব। সেই শখ পূরণ হয়েছে। যতটা ছবি কিংবা ভিডিওতে দেখেছিলাম তারচেয়ে বেশি সুন্দর এই জায়গাটা।
অটোরিকশা, সিনএনজি, মোটরসাইকেলচালকরা জানান, বাগানে ফুল ফুটলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। তখন আমাদের দৈনিক আয় রোজগার দ্বিগুণ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- টমেটো চাষে হেক্টরপ্রতি ৫ লাখ টাকা লাভ
চোখের তৃষ্ণা মেটাতে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে ও রূপের নদী যাদুকাটার মধ্যস্থলে বিশাল শিমুল বাগানে ফুটে থাকা টুকটুকে লাল শিমুল ফুলগুলো দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। কেউ বন্ধু-বান্ধব মিলে গলা ছেড়ে গাইছেন গান, আবার কেউ ঘোড়ায় চড়ছেন। কেউ কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউ শিমুল ফুলের মালা মাথায় পরিয়ে দিচ্ছেন প্রিয়জনের।
বাগানের মালিক সেলিনা আবেদীন জাগো নিউজকে জানান, এই বাগান ঘিরে এই এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বাগানে ঢুকতে হলে পর্যটককে ৩০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হবে।
এফএ/জিকেএস