তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভূমিকম্পের ফলে বেঁচে ফেরা মানুষরা তাদের ক্ষতিগ্রস্ত বা ধসে পড়া বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে। যতটুকু পুনরুদ্ধার করা যায় তা থেকে নতুন করে বাঁচার আশা তাদের। তবে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এই অঞ্চলে আবারও দু’দফায় আঘাত হানে ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন। এতে আরও ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
Advertisement
আরও পড়ুন> তুরস্কে ফের ভূমিকম্প/নতুন করে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন অনেকে
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভূমিকম্পের ফলে অনেকেই ধ্বংসস্তূপের ঢিবি বেয়ে উঠছেন। ফাটল ধরা দেওয়ালের মাঝে হাঁটছেন। প্রয়োজনীয় নথিপত্র, আসবাব এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছেন তারা। যতটুকু কাজে লাগে এসব দৈনন্দিন জিনিসপত্র তা দিয়ে আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চান তারা।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রবল ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ পর আন্তাকিয়ার বেশিরভাগ বাসিন্দা চলে গেছেন বা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার যখন ফের ভূমিকম্পে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটি আবার কেঁপে ওঠে, তখন জিনিসপত্র উদ্ধার করতে গিয়ে কমপক্ষে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
Advertisement
ইয়াসির বায়রাকি নামে একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের যা কিছু আছে আমরা বাঁচানোর চেষ্টা করছি কারণ ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। শুধু তাই নয় রাষ্ট্র কী ধরনের ক্ষতিপূরণ দেবে তা আমরা এখনো জানি না।’
৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তার পরিবার ১৫ ভাইবোনের মধ্যে এক বোনকে হারিয়েছে। ছয় দিন পর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন> ভূমিকম্প/তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়ালো
২৮ বছর বয়সী ব্যক্তি বলেন, ‘যারা চলে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে পারবো না। কিন্তু যেহেতু আমরা বেঁচে গেছি, আমরা যা কিছু আছে তা বের করার চেষ্টা করছি।’
Advertisement
বায়রাকি ও তার ৬ আত্মীয় তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে জিনিসপত্র উদ্ধার করতে সাহায্য করার জন্য সেখানে যান। তারা তাদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে বের হন।
আরেক বাসিন্দা কিনান আল-মাসরি তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কিছু সঞ্চয়, পাসপোর্ট এবং জন্মসনদ পুনরুদ্ধার করতে ফিরে যান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দেয়। ধসে পড়া ভবনগুলোতে এখনো দেওয়ালে ফোন নম্বর এবং নাম লেখা আছে, যাতে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার ১৩ দিনের মাথায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়া ও নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান শেষ করার কথা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জানিয়ে দেয় দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভোরের দিকে ভয়াবহ সেই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে বহু মানুষের।
সূত্র: রয়টার্স
এসএনআর/জেআইএম