অমর একুশে বইমেলার আজ ২১তম দিন। এরই মধ্যে জমে উঠেছে বইমেলা। ছুটির দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগমন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বইমেলা খোলা সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ফলে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সকাল থেকেই মেলায় আসতে শুরু করেন ক্রেতা-দর্শনার্থী, পাঠক-লেখক, প্রকাশকসহ সব ধরনের মানুষ। দিনভর মেলা প্রাঙ্গণে এসেছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। সন্ধ্যা নাগাদ মেলায় যেন মানুষের ঢল নামে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অমর একুশে বইমেলায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গত দুই বছর করোনার কারণে মেলা যেমন দেরিতে শুরু হয়েছে, আবার অনেকে নানা বিধিনিষেধের কারণে মেলায় আসতে পারেননি। তবে এ বছর নির্ধারিত সময়েই শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলা। নেই করোনার বিধিনিষেধও। মেলার শুরুতে পাঠক-দর্শনার্থীর ভিড় কম থাকলেও যতই সময় গড়িয়েছে মানুষের ভিড়ও ততই বেড়েছে। শুক্র ও শনিবারসহ ছুটির দিনগুলোতে সেই ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ সেই ভিড় যেন বাঁধ ভেঙেছে।
আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়ে বইমেলায় ছুটছে মানুষ
Advertisement
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ মেলা শুরু হয় সকাল ৮টায়। ফলে সকাল থেকেই শহীদ মিনারে আসা লাখো মানুষ মেলা প্রাঙ্গণেও ঢুঁ মারেন। দুপুরে সেই ভিড় কিছুটা কমলেও বিকেল নাগাদ মেলায় মানুষের ঢল নামে। সন্ধ্যায় তা বাড়ে আরও কয়েকগুণ। দিনভর আজ কয়েক লাখ মানুষ এসেছে বইমেলায়।
রাজধানীর মিরপুর থেকে বইমেলায় ঘুরতে আসা নাসিফ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় একটি প্রকাশনা উৎসবে এসেছি। প্রকাশনা উৎসব শেষে মেলা ঘুরে দেখছি। মানুষের প্রচুর ভিড় আজ মেলায়।
রাজধানীর ফার্মগেট থেকে আসা লাবিবা হাসান নামের এক তরুণী জাগো নিউজকে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন হওয়ায় সকালেই বের হই। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একটু ঘুরে বিকেলে বইমেলায় প্রবেশ করেছি। ভিড় থাকায় আজ লাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ আজ বইমেলায়। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসলাম, পছন্দের দুটি বইও কিনেছি।
আরও পড়ুন: ছবি তুলেছি ভিডিও করেছি বই কিনিনি
Advertisement
এদিকে, বইমেলায় থাকা বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরাও বলছেন বাড়তি ভিড়ের কথা। সকাল থেকেই ভিড় মেলা প্রাঙ্গণে। সন্ধ্যা নাগাদ যেন মানুষের ঢল নেমেছে। জিনিয়াস পাবলিকেশন্সের বিক্রয়কর্মী মশিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেলায় সকাল থেকেই মানুষের ভিড় ছিল। বিকেলে সেই ভিড় অনেক বেড়েছে। তবে মানুষের তুলনায় বই বিক্রি অনেকটাই কম।
অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলান নাথ জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে মানুষ বইমেলায় আসতে পারেনি। বাঙালির প্রাণের বইমেলায় যেই প্রাণ থাকার কথা সেটা গত দুই বছর ছিল না। এবার মেলায় সেই প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সবাই মেলায় আসছে, এটা ইতিবাচক। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ মেলায় মানুষের স্রোত দেখা গেছে। ঘুরতে এসে হলেও কেউ কেউ বই কিনছেন। মেলার শেষ দিকে এই ঢল এবার যেন মেলায় সেই আগের প্রাণ ফিরে পাওয়া।
আরও পড়ুন: ভাষা দিবসে এলো সর্বোচ্চ ৩০৩ নতুন বই
মেলা সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল ৮টা থেকে মেলা শুরু হয়েছে। এর আগেও স্বাভাবিক সময়ে আমরা দেখেছি ছুটির দিনে মেলায় লোকসমাগম বাড়ে। আজ প্রায় ১০ লাখ মানুষ মেলায় এসেছে। আজ মেলায় যেন আগের সেই প্রাণ ফিরেছে।
অমর একুশে বইমেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ডা. মুজাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এবারের বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা হিসেবে রূপ নিয়েছে। প্রাণের বইমেলা যে বলা হয় সেই প্রাণ মেলায় ফিরে এসেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ মানুষ আজ মেলায় এসেছে।
আরএসএম/কেএসআর/জেআইএম