কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে রায়েরবাজার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে যান শরিফুজ্জামান দম্পতি। কোলে পাঁচ বছরের শিশু আশফাক। গায়ে সাদা-কালো পোশাক। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা চলে যান বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলায়। সেখানে শিশু কর্নারে ঘুরে ঘুরে বই দেখেন তারা।
Advertisement
শরিফুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, এবারই প্রথম ছেলেকে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছি। অনেক আনন্দ লাগছে। মাতৃভাষার আন্দোলন নিয়ে ছেলেকে গল্প শুনিয়েছি। এখন মেলা থেকে বাচ্চার জন্য বই কিনবো। আমরাও পছন্দের লেখকদের বই নেবো।
আরও পড়ুন: জমানো টাকায় ২০ শহীদ মিনার বানালো শিশুরা
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এসব কথা বলেন শরিফুজ্জামান। তার মতো এমন হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে একুশে বইমেলায়। তাদের অধিকাংশই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বইমেলায় গেছেন।
Advertisement
সহপাঠীদের সঙ্গে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে বইমেলায় যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নাদিয়া পারভেজ। তিনি বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত বইমেলায় তিনবার গেলাম। সঙ্গে বন্ধু-সহপাঠীদেরও নিয়ে যাচ্ছি। সারাদিন মেলায় ঘুরে ঘুরে বই কিনবো। পরিবারের সদস্যদের উপহার দেবো বই।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার আনুষ্ঠানিক দাবি
প্রতিবারের মতো এবারও বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা বসেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলায় ঢুকতে রয়েছে তিনটি ফটক। প্রতি ফটক দিয়ে পাঠকরা লাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় ঢুকছেন। বাংলা একাডেমিতে একটি ফটক রয়েছে। সেখানেও লাইন ধরে মেলায় ঢুকছে মানুষ। পুলিশ সদস্যরা সবাইকে তল্লাশি করছেন।
শ্যামপুর থেকে বইমেলায় যান নূর হোসেন। তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। সঙ্গে তার স্ত্রীসহ দুই স্কুলপড়ুয়া মেয়ে রয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন: বইমেলা কি শুধুই একটি ভিড়ের নাম?
নূর হোসেন বলেন, ব্যস্ততার কারণে এতদিন বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ পাইনি। আজ অফিস ছুটি। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় চলে এলাম। দুপুরে শহীদ মিনারে মানুষের চাপ কমলে সেখানে যাবো। গোলাপ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবো।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষাপ্রকাশের স্টলের বিক্রয় কর্মী জাফর আলী বলেন, সাধারণত সরকারি ছুটির দিনে মেলায় বই বেচাকেনা হয় বেশি। সেই হিসেবে আজ সকাল থেকে মেলায় পাঠক উপস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে। বই ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
এমএমএ/জেডএইচ/এএসএম