রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূরণ হতে চলেছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগে আচমকা কিয়েভ সফরে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কোথাও গেলে যেভাবে আগে থেকেই ঢাকঢোল পেটানো হয়, এবার ছিল তার পুরো বিপরীত চিত্র। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ইউক্রেনে পৌঁছান তিনি।
Advertisement
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভে বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নিহত ইউক্রেনীয় সৈন্যদের স্মরণে তৈরি একটি স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন। এরপর টেলিভিশনে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন দুই নেতা।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, গত বছর যুদ্ধ শুরুর সময় ভ্লাদিমির পুতিন মনে করেছিলেন, ইউক্রেন খুবই দুর্বল এবং পশ্চিমা দেশগুলো বিভক্ত। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট যদি মনে মনে করেন, তিনি ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবেন, তাহলে বিরাট ভুল করেছেন।
আরও পড়ুন>> ইউক্রেনে রাশিয়ার নতুন আক্রমণ শুরু
Advertisement
এসময় জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউক্রেনীয়দের জন্য এ ধরনের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর বলে বর্ণনা করেন।
এই সংবাদ সম্মেলনের আগে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে করেন বাইডেন ও জেলেনস্কি।
One year later, Kyiv stands. Ukraine stands. Democracy stands. America — and the world — stands with Ukraine.Рік потому Київ стоїть. Україна стоїть. Демократія стоїть. Америка – і світ – стоїть з Україною. pic.twitter.com/6i02u3aFgd
— President Biden (@POTUS) February 20, 2023যেভাবে গোপন রাখা হয় সফরের খবরনিউইয়র্ক টাইমস বলছে, বাইডেন পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে চড়ে ইউক্রেনে গেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সফর গোপন রাখা হয়।
Advertisement
জানা যায়, শনিবার রাতে বাইডেন এবং তার স্ত্রী জিল ওয়াশিংটনের একটি রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে যান। এরপর কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন>> ব্রাসেলসে করতালি পেলেও যুদ্ধবিমান পাননি জেলেনস্কি
পূর্ব ইউরোপ সফরের সময় বাইডেন ইউক্রেনেও যেতে পারেন, এমন কথা এর আগে অস্বীকার করেছিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
নিউইয়র্ক টাইমস জনিয়েছে, হোয়াইট হাউস রোববার রাতে প্রেসিডেন্টের যে কার্যতালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে দেখা যায়, সোমবার বাইডেন ওয়াশিংটনে থাকবেন, এরপর সন্ধ্যায় ওয়ারশ’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে তিনি ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গেছেন।
ইউক্রেনকে নতুন কী দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রইউক্রেন সফরে গিয়ে কিয়েভ সরকারকে বাড়তি ৫০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। এর আওতায় ইউক্রেনকে আরও কিছু হিমার্স রকেট লঞ্চার দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এগুলো দ্রুত পরিবহনযোগ্য, যা দিয়ে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে পারে এমন বোমা ছোঁড়া যায়। এই লঞ্চার দিয়ে ৫০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুর একেবারে কয়েক মিটারের মধ্যে রকেট হামলা চালানো সম্ভব।
আরও পড়ুন>> ইউক্রেনকে মাত্র ৫০ টাকায় ড্রোন দিতে চায় মার্কিন কোম্পানি
ইউনিভার্সিটি অব বাথের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং ন্যাটোর সাবেক বিশ্লেষক ড. প্যাট্রিক বারি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সফর দেখে মনে হচ্ছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদে সমর্থন দিতে প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেন সফর শেষে এরই মধ্যে পোল্যান্ডে ফিরে গেছেন। সেখান থেকে শুরু হবে তার তিন দিনের আনুষ্ঠানিক সফর।
সূত্র: বিবিসি বাংলাকেএএ/