রাজধানীর গুলশান আগুন লাগা ভবনটির জমির মালিক মো. মোশাররফ হোসেন ও জাকির হোসেন নামে দুই ব্যক্তি। মোশাররফ ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঞা) আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। আর জাকির বে-স্টেট লিমিটেডের মালিক।
Advertisement
ভবনটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারির কাজ করা প্রতিষ্ঠানের একজন এনামুল হক কালাম। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি দেখতে এসে তিনি এসব তথ্য জানান।
এনামুল হক কালাম জানান, ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোর মালিক মোশাররফ ও জাকির। সেগুলো ভাড়া দেওয়া আছে। তবে জমির মালিকরা কেউ এ বাড়িতে থাকেন না। তবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন এবং সব ধরনের নিয়ম মেনেই ভবনটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটের দিকে গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর রোডের বহুতল ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ক্রমান্বয়ে ইউনিট বাড়ানো হয়।
Advertisement
সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারে যোগ দেন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরাও। দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আগুন লাগা ভবনের কয়েকটি ফ্লোর থেকে নারী শিশুসহ ২৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন ফায়ার ফাইটাররা।
এদিকে, সকালের দিকেও ভবন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও ভবনের মালিক ভেতরে প্রবেশ করেন। পুড়ে যাওয়া ফ্ল্যাটগুলোতে উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। তবে নিরাপত্তার কারণে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
তবে রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ১৯ কাঠা জায়গার ওপর দুটি বেজমেন্টসহ বাড়িটি ১৪ তলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বাড়িটির নকশা অনুমোদন করা হয়েছে নার্গিস আহমেদ গং- নামে এক নারীর নামে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নার্গিস আহমেদ গং এই জমির অংশীদার জাকিরের স্ত্রী।
২০২০ সালে ভবনটি নির্মাণের জন্য পুনঃঅনুমোদন দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল এভিয়েশন থেকে অনুমোদন নিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।
Advertisement
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজউক জোন-৪ এর পরিচালক মাকসুদুল আরেফিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
আরএসএম/এএএইচ/জেআইএম