ফিচার

এটিএম শামসুজ্জামানের প্রয়াণ দিবস

এটিএম শামসুজ্জামান হিসেবে অধিক পরিচিত হলেও তার পুরো নাম আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। একজন বাংলাদেশি অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক। ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। তার পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন।

Advertisement

ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিলেন আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তিনি ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নয়া জিন্দগানী। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি। ১৯৬৮ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার এতটুকু আশা চলচ্চিত্রে তাকে খবরের কাগজ বিক্রেতা চরিত্রে প্রথমবারের মত পর্দায় দেখা যায়।

অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয় বার, এর মধ্যে ‘দায়ী কে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে; ম্যাডাম ফুলি, চুড়িওয়ালা ও মন বসে না পড়ার টেবিলে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে; এবং চোরাবালি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হন। এছাড়া ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আয়োজনে তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়াও মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

তার উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্র হলো- অশিক্ষিত, গোলাপী এখন ট্রেনে, পদ্মা মেঘনা যমুনা, স্বপ্নের নায়ক, ওরা ১১ জন, লালন ফকির, লাঠিয়াল, নয়নমণি, অনন্ত প্রেম, দোলনা, অচেনা, যাদুর বাঁশি, রামের সুমতি, ম্যাডাম ফুলি, চুড়িওয়ালা, হাজার বছর ধরে, মোল্লা বাড়ীর বউ, মন বসে না পড়ার টেবিলে, গেরিলা, সূর্য দীঘল বাড়ী, ছুটির ঘণ্টা, দায়ী কে, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত ইত্যাদি।

Advertisement

অভিনয় জীবনের শুরুতে ষাটের দশকে টিভি নাটকে অংশগ্রহণ ছিল তার। তার উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকসমূহ হলো- রঙের মানুষ, ভবের হাট, ঘর কুটুম, বউ চুরি, নোয়াশাল, শতবর্ষে দাদাজান, শীল বাড়ি, নৈবচ নৈবচ। এটিএম শামসুজ্জামান ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।

কেএসকে/জিকেএস