দেশজুড়ে

নওগাঁয় বাণিজ্যিকভাবে সজিনার চাষ

বসন্তের শুরুতে সজিনা গাছ ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ফুলের পরিমাণ এতোটাই যে গাছের পাতা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে। রোগ বালাই কম হওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে নওগাঁয় সজিনার চাষ করা হচ্ছে।এক সময় বাড়ির আশপাশের উঠানে সজিনার গাছ লাগানো হতো। তবে সময় পরিক্রমায় এবং চাহিদা থাকায় কৃষকরা ফসলি জমিতে সজিনার চাষ করছেন। পরিকল্পিতভাবে সজিনার চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সজিনা ঢাকাসহ ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙায় সরবরাহ করা হয় বলে জানা যায়। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ৫০/৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও শেষ সময়ে দাম কমে প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২০/৩০ টাকায়।ফাল্গুনের শেষ ও চৈত্রের শুরুতে কচি সজিনার ডাটা খাওয়ার উপযোগী হয়। সাধারণত শাখা কেটে রোপণ করার মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছ থেকে সজিনা সংগ্রহ করা যায়। ডাটার পাশাপাশি ফুল, পাতাও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। সবজি হিসেবে এটি যেমন উপাদেয়, তেমনি এর ভেষজ গুণাবলি অসাধারণ। মৌসুমে নানা রোগব্যাধি নিরাময়, রোগ প্রতিরোধ ও শক্তি বৃদ্ধিতে সজিনা অত্যন্ত কার্যকর।নওগাঁ সদর উপজেলার বরুনকান্দি গ্রামের ফাতেমা বেগম জানান, আগে বাড়িতে খাবারের জন্য সজিনা লাগাতাম। গত বছর বাড়িতে খাবারের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করেছি। এবার গাছে প্রচুর ফুল আসছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভাল সজিনা পাবো।একই গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র হালদার জানান, আগে বাড়ির উঠানে সজিনা গাছ লাগানো হলেও এখন আবাদি জমিতে ও জমির আইলে গাছ লাগানো হচ্ছে। সজিনা চাষে তেমন কোনো ব্যয় করতে হয় না এবং রোগ বালাই কম। তবে ফুল আসার পর এবং সজিনা ধরার পর একটু কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাতেও পাঠানো হয়।নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, সজিনা চারা উৎপাদনের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নওগাঁয় ৩শ’টি ব্লক আছে। প্রতিটি ব্লক থেকে কাটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হবে। ইতোমধ্যে মাতৃগাছ সনাক্ত করা হয়েছে। মাতৃগাছ থেকে ডাল সংগ্রহ করে চারা রোপণ করা হবে। এছাড়া বারো মাসি সজিনা চারা উৎপাদনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।তিনি আরোও জানান, এটি একটি লাভজনক ফসল এবং এটির ওষধি গুণাগুণও আছে। বিশেষত বসন্ত, জন্ডিস, মূত্র সংক্রান্ত সমস্যায় সজিনার নানা অংশ ব্যবহার করে আসছেন ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা। তিনি বলেন, সজিনার গাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছে তাতে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হবে।আব্বাস আলী/এসএস/এমএস

Advertisement