বিনোদন

‘ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আরও এগিয়ে যাবে’

দর্শকপ্রিয় অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অভিনয় করছেন। শুধু ছোটপর্দা নয়, চলচ্চিত্রে কাজ করেও তিনি প্রশংসা লাভ করেছেন। জাগো নিউজের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জাগো তারকা’য় অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি। কথা হলো তার সঙ্গে-

Advertisement

জাগো নিউজ: আপনাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাই, কেমন আছেন?

নাসিম: ভালো আছি।

জাগো নিউজ: প্রথমে জানতে চাই অভিনয়ে কীভাবে আসলেন?

Advertisement

নাসিম: সবার যেভাবে আসা হয় আমার ও তাই। ছোটবেলায় স্কুল কলেজের বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা উৎসব হতো সেগুলোতে অংশগ্রহণ করতাম। গান কবিতা, অভিনয়চর্চা করতাম এরপরে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হই। থিয়েটার করতে করতে একসময় মনে হচ্ছিল যে গান করব না, থিয়েটার করবো? পরে সিদ্ধান্ত নিলাম পড়া-লেখার পাশাপাশি থিয়েটার চালিয়ে যাব। তাহলে অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা যাবে।

জাগো নিউজ: আচ্ছা ভাইয়া আমার এবং দর্শকদেরও প্রশ্ন- আগে আপনাকে যেমনটি দেখেছে এখনো আপনি ঠিক তেমনটি আছেন, এর রহস্য কী?

নাসিম: এর রহস্য হয়তো আমি নিজেকে বদলাতে চাই না, কিন্তু সময় তো মানুষকে বদলেই দেয়। বয়স বাড়ে, পাশাপাশি অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। দশ বছর আগে যা ছিল, এখন তো আর তেমনটি নাই। এটা কোনো রহস্যের বিষয় না। যারা আমাকে পছন্দ করেন তারা হয়তো আমাকে ছোটই দেখতে চান।

আরও পড়ুন: অভিনয় শিল্পী সংঘের উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা করছি : নাসিম

Advertisement

জাগো নিউজ: যখন আপনাকে নতুন করে কেউ পরিচয় করায় যে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি, তখন কেমন লাগে?

নাসিম: আসলে এটা একটা পদবী। আর ভালো লাগা তো কাজ করেই। যেহেতু আমি একজন অভিনয় শিল্পী। সেখান থেকেই আমার মনে হয়েছিল যে অভিনয় শিল্পীদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। তাই এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া।

জাগো নিউজ: ভাইয়া ‘বীরত্ব’ সিনেমাতে আমরা আপনাকে একটি নেগেটিভ ক্যারেক্টার এ দেখতে পেয়েছি এবং অনেক জায়গায় ইতিবাচক চরিত্রে ও আপনাকে দেখছি। কোন চরিত্রে অভিনয় করে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।

নাসিম: নেগেটিভ বা পজিটিভ এটা তো থাকবেই। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে কিছু খারাপ বৈশিষ্ট্য থাকে। আবার ভালোও থাকে। কেউ ভালোটাকে প্রাধান্য দিয়ে চলেন আবার কেউ কেউ সময়ের প্রয়োজনে বা কোনো রকমের কোনো এক বিশেষ বিশেষ কারণে নেতিবাচক বিষয়ের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়। অভিনয় শিল্পী হিসেবে দুই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার মতো দুই রকমের আনন্দ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: মেঘে ঢাকা শহরের নাসিম

জাগো নিউজ: ছোটপর্দার পাশাপাশি আমরা এখন আপনাকে বড়পর্দায় দেখতে পাচ্ছি। সিনেমাতে কী নিয়মিত হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে?

নাসিম: সিনেমায় নিয়মিত হবার বিষয়টা একটু ভিন্ন। আমরা যখন টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করলাম চলচ্চিত্রের পরিবেশটা যদি সেরকম থাকতো, তাহলে হয়তো আমি চলচিত্রেই নিয়মিত হতাম।

জাগো নিউজ: এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দিকে অনেকেই ঝুঁকছেন। ওটিটি প্ল্যাটফর্মটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

নাসিম: খুবই পজিটিভলি দেখছি। দেশের বাইরের মানুষ আমাদের টেলিভিশন দেখতে পাচ্ছে না। চলচ্চিত্র সেইভাবে দেখতে পাই না। সেই জায়গা থেকে এখন আমরা উন্মুক্ত হয়ে গেছি। এখন একটা চলচ্চিত্র মুক্তি পেলে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও মুক্তি পাচ্ছে। আর আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে আমাদের ভাষাভাষীর দিক থেকে বাংলা ভাষার মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। এখনকার ইন্ডাস্ট্রিটাকে আর ছোট করে দেখার কোনো কারণ নাই। বিদেশে আমাদের দেশের প্ল্যাটফর্ম এখন উন্মুক্ত হচ্ছে যে কোনো জায়গা থেকে বসে সাবস্ক্রাইব করে আপনি আপনার মন মতো আপনি সিনেমা বা নাটক দেখতে পাচ্ছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। তাই আমি মনে করি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি আরও সামনে এগিয়ে যাবে।

জাগো নিউজ: অনেকেই এমনো আছেন অভিনয় খুব ভালো করছেন, কিন্তু সুযোগটা পাচ্ছেন না। দেখা যাচ্ছে যে, কোথায় কি করতে হবে বা সেরকম কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, তাদের ক্ষেত্রে আপনি কী বলতে চান? নাসিম: এই জায়গাটা নিজেরটা নিজে তৈরি করতে হবে। এটা যেহেতু চাকরি না আবার কোনো দোকানের মতো ব্যবসাও না। এটা হলো নিজেকে বিকশিত করার জন্য যে মেধাটা থাকবে সেই মেধাকে নিয়ে আবার সবার সঙ্গে যোগাযোগটাও লাগবে। আপনি মেধাবী সেটা বোঝাতে হবে। তারপরেও আমি সহজ করি বলি বিষয়টা হলো অনেক মেধাবী শিল্পী নিজের মেধা নিয়ে নিজের চর্চা নিয়ে ঘরে বসে থাকে হয়তো পরিচালক তাকে খুঁজে বের করতে পারে না পরিচালক হয়তো এরকম একজন শিল্পীকে চাচ্ছে, কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না। আবার অনেক শিল্পী আছেন। যিনি সকল চর্চা করে সকল ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার যোগ্য তিনি ঘরের মধ্যে বসে আছেন। সেও কোনো পরিচালকের এর কাছে যেতে পারছেন না তো এই সংযোগটা দরকার। আমরাও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি যাতে করে যেসব অভিনয় শিল্পীরা তরুণ নতুন আসছেন তাদের নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এতে করে তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে জড়িত হওয়ার সুযোগ পাবে।

আরও পড়ুন: সভাপতি শহিদুল আলম সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক নাসিম

জাগো নিউজ: আপনি অভিনয় করছেন পাশাপাশি এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বে আছেন। আপনার সময় কাটছে কীভাবে?

নাসিম: সময় কাটছে সময়ের নিয়মে। এটাকে বলে টাইম ম্যানেজমেন্ট। আমার ঘর-সংসার, আমার অফিস, আমার অভিনয়, আমার সংগঠন, সময়গুলোকে ভাগ করে করে সময় বের করে মেনে চলতে হয়।

জাগো নিউজ: আপনার সঙ্গে এতক্ষণ আড্ডা দিয়ে, আপনার কথা শুনে অনেক ভালো লাগলো। এবার আমাদের দর্শকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলুন-

নাসিম: আপনারা যারা এতোক্ষণ ধরে আমার বকবকানি শুনলেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনারা বাংলা নাটক দেখুন, বাংলা সিনেমা দেখুন। আপনারাই হচ্ছেন শিল্পীর প্রধান শক্তি আপনাদের সশ্রদ্ধ সালাম।

এমএমএফ/এমএস