মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, ইউক্রেনের নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে রাশিয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। ইউক্রেনীয় জনগণকে নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও নির্বাসনে পাঠানোর মতো জঘন্য কাজ করেছে রুশ বাহিনী।
Advertisement
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে আয়োজিত নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। কমলা হ্যারিস আরও বলেন, পুতিন যদি মনে করেন, আমরা ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়া থেকে পিছিয়ে আসবো, তাহলে তিনি খুব খারাপভাবে ভুল করেছেন। সময় আসলে তার পক্ষে নয়।
আরও পড়ুন>> ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনের আহ্বান ঋষি সুনাকের
‘আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে ও আমরা আইন জানি। কোনো সন্দেহ নেই যে, রাশিয়ার কাজগুলো মানবতার বিরুদ্ধে। আর যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারণ করেছে, পুতিনের দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।’
Advertisement
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বেসামরিক জনগণের ওপর ব্যাপক আক্রমণ-নির্যাতন চালিয়েছে। এ অপরাধগুলোর সঙ্গে জড়িত নিম্নপদ থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন রুশ কর্মকর্তাদের সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।
রাশিয়ার ‘সন্ত্র্যাসী’ কর্মকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্তে ইউক্রেনকে শক্ত সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। তার পাশাপাশি ওয়াশিংটন কিয়েভকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার সবই পূরণ করবে বলে জানান কমলা হ্যারিস।
আরও পড়ুন>> ওয়াগনার গ্রুপের ৩০ হাজার সদস্য হতাহত: যুক্তরাষ্ট্র
এদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্য সমর্থন করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো আমরাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইউক্রেনে অতি জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে রাশিয়া।
Advertisement
কুলেবার দাবি, ইউক্রেনকে স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি হিসেবে মানে না বলেই সেখানে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনে যা যা করেছে, তার সবই যুদ্ধাপরাধ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ তুললেও, শুরু থেকেই বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
আরও পড়ুন>> ইউক্রেনই পুতিনের শেষ গন্তব্য নয়: জেলেনস্কি
মূলত, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি)। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো সন্দেভাজন রুশ নাগরিককে গ্রেফতার বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা নেই আইসিসির।
আইসিসি শুধু সেসব দেশের মধ্যেই তার এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে, যারা এ আদালত স্থাপন চুক্তিতে সই করেছে। আর রাশিয়া যেহেতু ওই চুক্তিতে সইকারী দেশ নয়, তাই এটির বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে না আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
আরও পড়ুন>> ইউক্রেনে রাশিয়ার নতুন আক্রমণ শুরু
তবে আইসিসি সন্দেহভাজন রুশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে না পারলেও, এ ক্ষমতা রয়েছে ইউক্রেনীয় আদালতগুলোর। জানা যায়, নিরস্ত্র এক বেসামরিক নাগরিককে গুলি করায় এরই মধ্যে ভাদিম শিশিমারিন নামের এক রুশ ট্যাংক কমান্ডারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ইউক্রেনের একটি আদালত। তাছাড়া ইউক্রেনের আদালত এ পর্যন্ত শতাধিক সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধীকে চিহ্নিত করেছেন।
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ