দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস। এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার পছন্দের শীর্ষে উঠে আসে। এতে সপ্তাহজুড়েই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার।
Advertisement
গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে গেছে। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫২ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ১৩২ টাকা ৩০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়ালেও কোম্পানিটি লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালের অক্টোবার-ডিসেম্বর প্রান্তিকের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ২১ পয়সা। এতে ছয় মাসের (২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) হিসাবে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ পয়সা।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির সাম্প্রতি লভ্যাংশের ইতিহাসও খুব একটা ভালো না। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৩ শতাংশ নগদ দেয়। তার আগে ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ২০২০ ও ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।
Advertisement
তার আগে ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ বোনাস দেওয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানি। এছাড়া ২০১৭ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল আলহাজ্ব টেক্সটাইল। তার আগে ২০১৬ এবং ২০১৫ সালেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল।
২২ কোটি ২৯ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৪৯টি। এর মধ্যে ২৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং সরকারের কাছে আছে দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
এদিকে শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ার বড় অঙ্কে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ৩৪ লাখ ৯ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৪৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকের শেয়ার দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। ১০ দশমিক ৫৪ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।
Advertisement
এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ দশে স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মুন্নু এগ্রোর ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ, বিচ হ্যাচারির ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ, অ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ফাইন ফুডের ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ল্যাম্পের ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/এমআইএইচএস/এমএস