জাতীয়

মন্দার মধ্যেও প্রবৃদ্ধি অর্জন চট্টগ্রাম বন্দরের

বৈশ্বিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট মন্দার মধ্যেও কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিং-এ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।

Advertisement

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক শিপিং জার্নাল লয়েড’স লিস্টের ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর গত বছরের তুলনায় আরও ৩ ধাপ এগিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কনটেইনার পোর্টের তালিকায় ৬৪তম অবস্থানে রয়েছে।

বাণিজ্যিক কাজ সহজ করার লক্ষ্যে বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা বর্ধিতকরণ,পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী ক্যাপিটাল ড্রেজিং,পাইরেসি শূন্যের পর্যায়ে নিয়ে আসাসহ লালদিয়া চর অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে।

এ সরকারের চট্টগ্রাম বন্দর সংক্রান্ত সাম্প্রতিক এক নথি থেকে বিশ্বব্যাপী মহামন্দার মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিষয়টি উঠে এসেছে। দ্রুততম সময়ে বাণিজ্যিক পণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর হতে চায়না ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল চালুর ফলে পণ্য পরিবহনের হাব পোর্টগুলোর ওপর নির্ভরতা কমানোসহ পরিবহনের সময়কাল হ্রাসের মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানিকরণের খরচ হ্রাস পাবে। দুই মহাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ ও সুযোগ বেড়ে যাবে।

Advertisement

বৈশ্বিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হওয়া বিবিধ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চট্টগ্রাম বন্দর গত অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং এ ৩ শতাংশ ও জাহাজ হ্যান্ডলিং-এ ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

বিশ্বের অধিকাংশ বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং-এর মাত্রা ব্যাপকহারে হ্রাস পেলেও চট্টগ্রাম বন্দর সম্মানজনক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্লাবে অবস্থান ধরে রেখেছে। গত বছরে চট্টগ্রাম বন্দর ৩.১৪ মিলিয়ন কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।

বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা বর্ধিতকরণ করার জন্য নিউমুরিং ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এই ইয়ার্ড প্রায় ৯০ হাজার ৫২১ বর্গমিটারজুড়ে বিস্তৃত এবং ইয়ার্ডে প্রায় ৪ হাজার টিইইউস ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কনটেইনার রাখা সম্ভব। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা সামগ্রিকভাবে ৪৯ হাজার ১১৮ টিইইউস হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস এ উন্নীত হয়েছে। ফলে বন্দরে আগমনকারী জাহাজসমূহ দ্রুততার সঙ্গে তাদের কনটেইনার নামিয়ে পরবর্তী গন্তব্যে যেতে পারছে এবং বিভিন্ন শিপিং লাইনগুলো বন্দরের ওপর কোনো ধরনের অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করতে পারছে না। ফলে সামগ্রিকভাবে পণ্য আমদানি খরচ হ্রাস পেয়েছে।

করোনাপরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে চট্টগ্রাম বন্দর তার অবস্থান আরও দৃঢভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কোস্টগার্ডের নেতৃত্ব আইএসপিএস চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুচারুরূপে পর্যবেক্ষণ করে পরিদর্শক দল তাদের গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে পুরাতন ডিজি কার্গোগুলো বন্দর প্রাঙ্গণ হতে অপসারণের মাধ্যমে নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা হয়েছে।

Advertisement

বাণিজ্যিক জাহাজের অপেক্ষামাণ সময় হ্রাস করা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামে বন্দরে ৭০ শতাংশ কনটেইনার জাহাজ সরাসরি এসেই বার্থে অবস্থান নিতে পারছে। এছাড়া ডুয়েলটাইম ও জাহাজের গড় অবস্থান ৯ দশমিক ১৬ দিন এবং ২ দশমিক ১৩ দিনে নেমে এসেছে।

জেএইচ/জিকেএস