সাহিত্য

ভালোবাসার পাঁচটি কবিতা

নিমি

Advertisement

এটাই আমার প্রথম গিটার এটাই প্রথম গানতোমার নামে সুর ধরেছি তোমার অবদান।ভরসা রেখো গিটারটাতে ভরসা রেখো সুরেএই গানটাও পৌঁছে যাবে থাকোই যতদূরে।

ও নিমি শুনবে কি আমার এই গান?নীরবতা মানেই কি সকল অবসান!

নদীর বুকে জলের খেলা মেঘের খেলা নীলে,গান হবে কি এই ফাগুনে তুমি আমি মিলে?হলে গান যত ম্লান হাওয়ায় দেব ছুড়েভরসা রেখো গিটারটাতে ভরসা রেখো সুরে।

Advertisement

ও নিমি আসবে কি আমার গানের ঘরে?সবটা লিরিক তোমার নামে তোমার পথ ধরে।

সুরে তালে মহাকালে নামবে মাতাল ভোর,প্রথম গানের ধুয়াজুড়ে তোমার নামের ঘোর। মন ডুবে যায় কী নিরুপায় তোমার সমুদ্দুরে,ভরসা রেখো গিটারটাতে ভরসা রেখো সুরে।

ও নিমি আসবে কি আমার গানের ঘরে?সবটা লিরিক তোমার নামে তোমার পথ ধরে।

****

Advertisement

কামনায় সাধনায়

তোমাকে চেয়েছি, একাকী যখনবিকেল গড়িয়ে ঘোর সন্ধ্যা নামে।তোমাকে চেয়েছি, দিন আর রাতেভাগ্যরেখায় ঘেরা এ দুই হাতে।তোমাকে চেয়েছি, কী কোমল স্বরেনিয়ম করে রোজ নামাজের পরে।

তোমাকে খুঁজেছি, চেনা নদী জলেধূসর পথের শেষে হিজলের তলে।গমের শীষ ভেঙে দিনভর ঘুরেধান ক্ষেত আর বাউলের সুরে।

তোমাকে খুঁজেছি, কিশোরীর ঘামেডাকঘর ঘুরে আসা প্রতিটি খামে।নাকফুল ঘোমটা লাল শাড়ি পাড়েলুটিয়ে পড়া চুলে তরুণীর ঘাড়ে।

তোমাকে খুঁজেছি, গোধূলি বেলায়খুঁজে খুঁজে হয়রান পাখির মেলায়।বলো—তোমাকে কি কেউ পায়রূপসা কিংবা আড়িয়াল খাঁয়?

****

তোমার জন্য

এক সকালে তোমার জন্য নরম রবির আলো নেবো,দুর্বা ঘাসের শিশির কণা তোমার নাকে ছুঁয়েই দেবো।এক বিকেলে তোমার জন্য হিজল ফুলের মালা নেবো, চুলের ভাঁজে আলতোভাবে ছাতিম ফুল বসিয়ে দেবো।

এক দুপুরে সবটুকু রোদ তোমার জন্য রাখবো জমা,ভুল-ত্রুটি করলে কিছু মেঘের নামে কোরো ক্ষমা।এক গোধূলির রাঙা আলো তোমার জন্য রাখবো চেয়ে,ভরাট গালে মেখে দিতেই প্রেমের রাত্রি নামুক ধেয়ে।

এক প্রদোষে আনবো বাঁশি বাঁধবো সুর তোমার নামে,প্রেমের সুরে কাঁপিয়ে দেবো নাড়িয়ে দেবো বুকের বামে। এক রাতের সবটুকু খোশ তোমার পায়ে লুটিয়ে পড়ুক,এসব যদি না হয় কিছুই এই প্রহরেই কবি মরুক। ****

কবিতার অধিকার

যে ছেলেটা তোমাকে কামনা করেখুইয়ে দিলো দিন ও রাতের বয়স। যে ছেলেটা তোমাকে উপমা ধরেগুছিয়ে নিল কুড়ি তিনেক কবিতা—তাকে তুমি ভালো না বাসলেওঅন্তত ঘৃণা করো না কখনো।

যদি সে কোনদিন তোমার চোখে তাকিয়ে, নিমের হাওয়ার মতো শান্ত স্বরে বলে—তোমাকে ভালোবেসে এসেছি এতদূর। গুমোট দুপুরের মতো চুপ না থেকে তার গালে হাত রেখে অন্তত বলো—আমাকে ছাড়াই ভালো থেকো, কবি!

অথবা তাকে দিয়ে দিয়ো—অনামিকায় কবিতার অধিকার।

****

উপেক্ষার প্রহর

দরজায় আসা ভিখারির মতনসে আমাকে ফিরিয়ে দেবে,তা তো আমি আগেই জানতাম। তবুও সে যখন সত্যি সত্যি ফিরিয়ে দেয়—রাতের সূর্যমুখী হয়ে লজ্জায় মাথা নুয়ে পড়ে।

রিফিউজি হয়ে ভাসতে থাকাদলছুট এক কচুরি ফুলের মতোইউদ্দেশ্যহীন মনে হতে থাকে নিজেকে—উপেক্ষার প্রহরে অপমানে ঝিম লাগে দেহে।

সাদা জোছনার গায়ে দীর্ঘশ্বাস রেখে বলি—তাতে কী হলো! সে আমার কেউ নয়!তখনই বুকের ঘণ্টায় প্রশ্ন বেজে ওঠে—আমি কি তার হাতে গড়া কবি নই?

নির্জন সুপারি বনের কাছে—লজ্জায় আমার দেহ নুয়ে পড়ে। আমাকে কবরে শুইয়ে দাও,আমি তার হাঁটার শব্দ শুনবো!

এসইউ/এমএস