পানির স্তর আশঙ্কাজনক নেমে যাওয়ায় কাপ্তাই হ্রদে মিলছে না মাছ। এতে লোকসানে পড়েছে মহালছড়ির কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতিও। মাছের উৎপাদন বাড়াতে ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্য বছর এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ টন মাছ পাওয়া গেলেও এবার মাত্র ১-২ টন আহরণ করা যাচ্ছে। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাপ্তাই হ্রদের মাছ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। ফলে শুকিয়ে গেছে কাপ্তাই লেকের অধিকাংশ জলাভূমি। এতে কমে গেছে মৎস্য আহরণ। বিপাকে পড়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৬ হাজার জেলে। বছরের ৯ মাস এখানে মাছ শিকার করেন তারা। এসব জেলেদের অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা। মাছ না পাওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।
Advertisement
মৎস্যজীবী লুৎফর রহমান বলেন, ‘অন্য বছর এ সময়ে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এবছর পানি কমে যাওয়ায় জালে কোনো মাছ পড়ছে না। মাছ না পাওয়ায় আমরা আর্থিক সংকটে পড়েছি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
মৎস্যজীবী মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘মাছ শিকার করেই চলে আমাদের সংসার। কিন্তু পানি কমে যাওয়ায় মাছ মিলছে না।’
মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রইস উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, লেকে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় মৎস্য আহরণ কমে গেছে। ফলে জেলে-ব্যবসায়ীসহ কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীলরা বিপাকে পড়েছে। সরকারী উদ্যোগে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে লেকের নাব্যতা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।
মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘এবছর পানি না থাকায় মাছ আহরণ কমে গেছে। ফলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছি। ড্রেজিং করা হলে লেকের গভীরতা বাড়বে। মাছও বেশি ধরা পড়বে।’
Advertisement
মাছের অভাবে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে জানিয়ে মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসরুল্লাহ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, কাপ্তাই লেকে ড্রেজিং প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে মাছের উৎপাদন কমে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়েক বছর ধরে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। ফলে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নেমে গেছে। কাপ্তাই লেকে মাছ উৎপাদনও কমেছে।
এসজে/জেআইএম